গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষা নদীতে ট্রলারে করে মেয়ে নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ ও গণউপদ্রব সৃষ্টির অভিযোগে একটি ট্রলারে অভিযান চালিয়ে আসামি ধরতে গিয়ে গত বুধবার রাতে আসামিদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য ও ট্রলারের মাঝি আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃতদের গাজীপুর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলম চাঁদ জানান, গত বুধবার রাত আটটার দিকে সরকারের জরুরী সেবার কল সেন্টার ৯৯৯ থেকে আমরা সংবাদ পাই, কাপাসিয়া উপজেলাধীন শীতলক্ষ্যা নদীতে দুটি মেয়েকে একদল যুবক উশৃংখল আচরণ করছে, উচ্চস্বরে গান-বাজনা করছে এবং অসাসামাজিক কার্যকলাপ করার চেষ্টা করছে ও গণউপদ্রব সৃষ্টি করছে। এমন খবরের ভিত্তিতে কাপাসিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল উপজেলার সাফাইশ্রী এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলারটিকে আটকের চেষ্টা করে। এসময় ট্রলারে থাকা উশৃংখল যুবকরা পুলিশকে লক্ষ করে পানির বোতল এবং কোমল পানীয়ের বোতল ছুড়ে মারে এবং এতে পুলিশ সদস্য ও ট্রলারের মাঝি আহত হয়। যুবকরা লম্বা বাশ দিয়ে ট্রলারের মাঝিকে আঘাত কওে তার হাত ও পা ভেঙ্গে দেয়। পুলিশ তাদের পরিচয় দিয়ে তাদেরকে ট্রলার নদীর তীরে ভেড়ানোর নির্দেশ দিলে উশৃংখল তরুণরা নির্দেশ অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের বহনকারী ট্রলারযোগে ঊশৃংখল যুবকদের বহনকারী ট্রলারটিকে থামানোর চেষ্টা করে। এসময় উশৃংখল যুবকরা তাদের ট্রলার দিয়ে পুলিশ বহনকারী ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে পুলিশ বহনকারী ট্রলারটি শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে যায়। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন পুলিশ সদস্য ও চালককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে এ খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশের একাধিক টহলদল উপজেলার নাকাসিনি এলাকায় শীতলক্ষা নদীতে অভিযান চালিয়ে পলায়ানরত ট্রলার থেকে ২ মেয়েসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরো জানান, আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন কাপাসিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ আলম, কনস্টেবল আরশেদ, মো: ইসমাইল ও আল-আমিন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত ট্রলারের মাঝি রফিকুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রেফতার যুবকরা হল, মোঃ শফিকুল ইসলাম, মো: মাহবুব আলম, মোঃ রাসেল, মোঃ মারুফ, মোঃ ইমন, মো: মেহেদী, মোঃ সুমন, মোঃ মুরাদ, মোঃ মাসুম, মো: ইমরান, নিহাদ মোল্লা। তাদের সকলের বয়স ১৬-১৮ বছরের মধ্যে। গ্রেফতার দুই মেয়ে হলো সোনিয়া (২২) ও মুক্তা (১৮)। এদের বাড়ী গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় ও নারায়াণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায়।
এ ঘটনায় থানার এসআই সাজ্জাদুল আলম বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃতরাসহ মোট ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আসামীগণ বেআইনি জনতাবদ্দে গণউপদ্রব সৃষ্টি, পুলিশের সহকারী কর্তব্য কাজে বাধা প্রদান, সরকারী কর্মচারীকে স্বেচ্ছাকৃতভাবে আঘাত, উত্তেজনাবশত নৌকার মাঝিকে গুরুতর আঘাত দান এবং অপরাধমূলক বল প্রয়োগে আক্রমণ করে পুলিশের বহনকারী ট্রলারের ক্ষতি সাধন করা।