গণবাণী ডট কম:
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ভবনের নীচতলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটনা ঘটেছে। অত্যাধুনিক ও আগুন নিয়ণ্ত্রণের সকল প্রযুক্তি থাকার পরেও কমিশনের ভবনে আগুণের ঘটনাকে বিস্ময়কর বলছে ফায়ার সর্ভিস। আগুনে ইভিএম ও ইভিএম সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পুড়েগেছে বলে জানিয়ে কমিশনের কর্মকর্তারা।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের ১২ তলা বিশিষ্ট প্রধান ভবনের নীচতলায় রবিবার রাত ১১টা ৬ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার খবর পেয়ে রাত সোয়া ১১টার দিকে প্রথমে ৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। পরে আরও সাতটি ইউনিট এই কাজে যোগ দেয়। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে আগুন নিয়ণ্ত্রণে আসে।
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডে কিছু ইভিএমের ক্ষতি হতে পারে। ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ বিষয়ে পরবর্তীতে খোঁজ নেব।”তিনি বলেন, “আগুন কিভাবে লেগেছে এবং ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে, তা তদন্তের পর জানা যাবে।”ব্রিগেডিয়ার সাইদুল বলেন, “ভোটার ডেটাবেইজের কোনো ক্ষতি হবে না।”
অগ্নিকাণ্ডে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইজের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন ইসি কর্মকর্তারা। তাদের দাবী নির্বাচন ভবনের বেইজমেন্টে ইভিএম সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থার গুদাম রয়েছে। ভবনের ১১ তলার জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইজ সংরক্ষিত।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে এনআইডি জিডি ও ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হন। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রশিক্ষিত লোকবল কাজে নামে। পরে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারও মধ্যরাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
এর আগে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাশের ভবনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আগুন লাগায় ইসির এনআইডি সেবা বিঘ্ন ঘটেছিল।
দুটি তদন্ত কমিটি গঠন
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন সাংবাদিকদের জানান, অগ্নিকাণ্ড তদন্তে নির্বাচন কমিশন ও ফায়ার সার্ভিস আলাদা দুটি কমিটি গঠন করেছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দেবাশীষ বলেন, “বেইজমেন্টে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ৫০০ ইভিএম ছিল। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা যায়নি; এটা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানা যাবে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আধুনিক এ ভবনে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র সচল ছিল কি না, সে বিষয়ে অবগত নন তিনি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরের মধ্যে ইসির নিজস্ব কমিটি প্রতিবেদন দেবে। তদন্ত কমিটি জানাবে এ ভবনের নিচ তলায় অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র সচল ছিল কি না? এ মুহূর্তে বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত কমিটির বক্ত্ব্যই কমিশনের বক্তব্য।
দমকল বাহিনী আসার আগে ইসির অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল কি না, বিদ্যমান ব্যবস্থা কাজ করেছে কি না বা কোনো কাজে লেগেছে অথবা গাফলাতি ছিল কিনা তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
মাহবুব তালুকদার জানান, তদন্ত কমিটির অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ, কীভাবে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে এবং আগামীতে যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দেবে।