গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরে স্বাসরোধ করে এক নারী পোশাক কর্মীকে হত্যার সাড়ে তিন বছর পর হত্যার রহস্য উৎঘাটন ও এক আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারের পর আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধী দিয়েছে।
নিহতের নাম সাবিনা (২০)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানাধীন জোকা গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া থানাধীন সূর্য্যনারায়নপুর গ্রামে কামালের বাড়িতে খালা, খালু ও নানীর সাথে ভাড়া বাসায় থেকে তৈরী পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
গ্রেফতার আসামীর নাম মোঃ তুলা মিয়া (২৪)। তিনি , ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানাধীন দর্শা গ্রামের মোঃ আব্দুল ছালামের ছেলে। তাকে গত বহস্পতিবার ভোরে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার ভরাডোবা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান শুক্রবার সকালে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, নিহত সাবিনা একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করতেন। তিনি ৪টি বিয়ে করেন। তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু সাবিনার চলাফেরা ভালো ছিল না। সাবিনা বিভিন্ন ছেলেদের সাথে ঘুরে গভীর রাতে বাসায় আসতো। এই নিয়ে সাবিনার খালু সুজন তার সাথে চিল্লা পাল্লা করতো। এলাকার মানুষ সাবিনার খালু সুজনকে সাবিনা সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলে বিচার দিত। এরই জের ধরে ২০১৯ সালের ২৫ জুন রাতে সাবিনাকে খালু সুজনের বাবা গালমন্দ করে। তখন সাবিনা উত্তেজিত হয়ে তার খালুর বৃদ্ধ বাবাকে চড় মারে। এবিষয়ে সাবিনার খালু সুজন সাবিনাকে লাঠি দিয়ে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেয়। তখন সাবিনা তার খালু সুজনের বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে মামলা করবেন হুমকি দিয়ে বাড়ী থেকে চলে যায়। পরে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে গত ২০১৯ সালের ২৬ জুন তারা শ্রীপুরের রাজাবাড়ী বাজারে সাবিনাকে খুঁজে পায়। তখন সুজন সাবিনাকে অনেক অনুরোধ করা সত্তেও সাবিনা বাসায় ফিরে আসতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর সাবিনার খালু সুজন আসামী তুলা মিয়া ও অন্যান্য আসামীদের সহযোগীতায় কৌশলে সাবিনাকে শ্রীপুর থানাধীন রাজাবাড়ী বাজারের পিছনে পুকুর পাড়ের নির্জন স্থানে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়।
পরে ২৭ জুন সাবিনার মৃতদেহ শ্রীপুর থানাধীন রাজাবাড়ী বাজারস্থ রহম আলীর পুকুরের পানিতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সংক্রান্তে সাবিনার খালা ফুলেমা খাতুন সাথী (২৪) বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, মামলাটি শ্রীপুর থানা পুলিশ প্রায় ২ মাস তদন্ত করেন। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ২ মামলাটি প্রায় ২ বছর ১৫ দিন তদন্ত করেন। পরবর্তীতে সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআই গাজীপুর মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তকালে মামলার নথিপত্র, পারিপাশ্বিক অবস্থা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী তুলা মিয়াকে গ্রেফতার করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন হয় এবং উক্ত আসামী ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে গাজীপুরের বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি প্রদান করে।