নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
আজ ২৩ জুলাই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন তাজউদ্দীন আহমদের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী। তাজউদ্দীন আহমদ ১৯২৫ সালের এইদিনে ঢাকার অদুরে গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়া উপজেলাধীন দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৌলভী মোঃ ইয়াসিন খান এবং মাতা মেহেরুননেসা খান। তার স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা ও আদর্শবাদের অনন্য এক প্রতীক তাজউদ্দীন আহমদে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের আগে প্রতিটি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা কর্মসূচির অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার ও সারাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে শুরু হয় বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বে মূল দায়িত্ব পালন করেন তাজউদ্দীন আহমদ।
তিনি ১৯৭১ সালে প্রবাসী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে সফল ভূমিকা পালন। এরপর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতার পরপরই প্রিয় নেতার মুক্তির জন্য বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত তোলপাড় করে ফেলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি মন্ত্রিসভা থেকে সরে যান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করার পরেই তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দী করা হয়। পরে তিনি সহ জাতীয় ৪ নেতাকে জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর, বন্দি থাকা অবস্থায় তাকে এবং অপর ৩ জাতীয় নেতাকে জেলখানার অভ্যন্তরেই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে ঘাতকচক্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও সার্বভৌমত্ব অর্জনের ইতিহাসে চির অম্লান হয়ে রবে জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের নাম।
মহান এ নেতার জন্মদিন পালন উপলক্ষে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী।