গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক বছর বয়সী শিশুকে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অপহরণ করার পর পুলিশ অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত অপহরণকারী ও ক্রেতাকে গ্রেফতার করার পর শুক্রবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া শিশুর নাম লাবিব (১)। সে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন মাঝিরখোলা এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে।
গ্রেফতারকৃত অপহরণকারী নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা থানার বাউশী দশাদার গ্রামের সুলতান মিয়ার স্ত্রী মোসাঃ সুলতানা খাতুন (২৬)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন ভোড়া (চৌকিদার বাড়ী)র সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ীর ভাড়াটিয়া। অপরজন ভোলা জেলার মনপুরা থানাধীন হাজীরহাট গ্রামের আনসার মীরের মেয়ে মোসাঃ ফারজানা আক্তার (১৯)। তিনি অপহৃত শিশুকে ক্রয়ের জন্য অপহরণকারীর ভাড়া বাসায় অপেক্ষা করছিলেন।
শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছেন জিএমপির সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে (৩ নভেম্বর) সদর থানায় সুজন মিয়ার স্ত্রী হামিদা আক্তার (২২) অভিযোগ করে করেন, তিনি তার স্বামী ও দুই ছেলে হাবিব (৭) ও লাবিব (১) কে নিয়ে মহানগরীর সদর থানাধীন মাঝিরখোলা এলাকায় ভাড়া বাড়ীতে বসবাস করেন। দেড় মাস আগে তার বড় ছেল হাবিব হাটুতে ব্যাথা পাওয়ায় তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসক তার ছেলের ডান পায়ে প্লাষ্টার করে সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি রাখেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় তিনি, তার স্বামী এবং আত্মীয়স্বজন মিলে হাবিবকে দেখাশুনা করে আসছিলেন। হাসপাতালে থাকার সময় গত ১ নভেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে বড় ছেলেকে দেখাশুনা করাকালে বোরকা পরিহিত অজ্ঞাতানামা এক মহিলা কৌশলে তার সাথে মিশে কথা বলে। এরই ফাঁকে ঐ মহিলা তার ছোট ছেলে লাবিবকে হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ড থেকে অপহরণ করে নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, এমন অভিযোগ পাওয়ার পর রাতেই সদর থানায় মামলা (নং-০২ তারিখ ০৩-১১-২০২৩) রুজু করা হয়। পুলিশ ঘটনা জানার সাথে সাথেই কয়েকটি টিম বিভিন্নভাবে ভিকটিমকে উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু করে। পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তি ও সোর্সের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে অপহৃত ভিকটিম শিশু লাবিবকে উদ্ধারে পুবাইল থানা এলাকায় এবং সর্বশেষ সদর থানাধীন ভোড়া এলাকার চৌকিদার বাড়ী অভিযান পরিচালনা করে শিশু লাবিবকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হন এবং অপহরণকারী নারীকে গ্রেফতার করে। এ সময় উক্ত স্থানে অপহৃত শিশুকে ক্রয়ের জন্য উপস্থিত এক বেদে নারীকেও গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে অপরহণকারী নারী পুরো ঘটনা স্বীকার করে জানায় অপহৃত শিশু লাবিবকে ক্রয়ের জন্য তারই বান্ধবী মোসাঃ ফারজানা আক্তার ঢাকা থেকে এসে তার বাসায় রাত্রি যাপন করে এবং সকাল হলেই সে শিশুটিকে নিয়ে ঢাকায় চলে যেত। তাদের শুক্রবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মন্তব্য