নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার টোক নয়ন বাজারে সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে রাতের আঁধারে গড়ে তোলা চারটি দোকান ঘর উচ্ছেদ করেছে উপজেলা প্রশাসন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন কাপাসিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত নূর মৌসুমী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কাপাসিয়া উপজেলার টোক নয়ন বাজারটি সুলতানী আমল থেকেই ঐতিহাসিকভাবে প্রসিদ্ধ। এ বাজার প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপর বিস্তৃত। এরমধ্যে প্রায় চার বিঘা জমি রয়েছে সরকারি ১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত। গত ১০-১৫ বছরের মধ্যে এ বাজারের অধিকাংশ খাস জমি দখল করে ছোট বড় প্রায় শতাধিক ঘর নির্মাণ করে নিয়েছে প্রভাবশালী মহল। বিশেষ করে টোক বাজারের গরুর হাটের বিশাল মাঠটি দখল করে ৩০-৩৫টি ঘর নির্মাণ করেছে তারা। তাছাড়া কাঁচা বাজার ও ইউপি কার্যালয়ের প্রবেশ পথের দুপাশে সম্প্রতি ২৫-৩০টি ঘর নির্মাণ করেন বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল।
সূত্র আরো জানায়, প্রায় দুই মাস পূর্বে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আধারে টোক বাজারের সরকারি খাস জমিতে চলাচলের পথ বন্ধ করে চারটি দোকান ঘর নির্মাণ করে। এ বিষয়ে টোক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ. জলিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি চক্র গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কাপাসিয়ার টোক নয়ন বাজারের টোক-কিশোরগঞ্জ সড়ক থেকে টোক ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের প্রবেশ পথের পশ্চিম পাশে প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ ও ৪০ ফুট প্রশস্ত সরকারি খাস জমিতে ৪টি আধা পাকা দোকান ঘর নির্মাণ শুরু করে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিভাবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উক্ত স্থাপনা নির্মাণ না করে দখলদারদের নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেওয়ার লিখিত নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চারটি দোকান নির্মাণ করে ব্যবসায়িক কাজ পরিচালনা করে আসছিল। ফলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঙ্গলবার সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চারটি ঘরই উচ্ছেদ করেছেন। পরে সেখানে সরকারি জমির সাইন বোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত নূর মৌসুমী জানান, স্থানীয় কয়েখজন অবৈধ দখলদার সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টোক বাজারের ১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত কিছু জমি অবৈধভাবে দখল করে চারটি ঘর নির্মাণ করছিল। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মঙ্গলবার ওই ঘরগুলো উচ্ছেদ করা হয়।
তিনি আরো জানান, উপজেলার অন্যান্য জায়গায়ও যে সকল সরকারি জমি বেদখল হয়ে আছে, সেগুলোও উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।