গণবাণী ডট কম:
শুরায়ে নিজামের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজনের জন্য ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের নিকট ইজতেমার ময়দান হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়দান বুঝে নেয়ার পর মাঠ গুছানোর পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করছেন সাদ অনুসারীরা।
স্বারষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুরায়ে নিজামের অনুসারীরা মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ের আগেই ময়দান জেলা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করেন। ইজতেমার ময়দানে জেলা প্রশাসকের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কেন্দ্রে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম প্রথম পর্বের আয়োজকদের কাছ থেকে ময়দান বুঝে নেন। শুরায়ে নিজামের পক্ষে মাঠ হস্তান্তর করেন তাবলীগের শীর্ষ মুরুব্বী খন্দকার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ হান্নান, আলমগীর হোসেন, হাবিবুল্লাহ রায়হান, মামুন হাশমী, ডা: আজগর, জমির আলী, আবুল হাসনাত, মোস্তফা কামাল, রুহুল আমিন প্রমুখ। এসময় আরো উপস্তিত ছিলে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব- মোঃ আব্দুল হান্নান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) মোঃ ইব্রাহিম খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
শুরায়ে নিজামের অনুসারীদের নিকট থেকে ময়দান বুঝে নেয়ার পরে জেলা প্রশাসক মঙ্গলবার বিকেল তিনটার আগেই দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার আয়োজক মাওলানা সাদ অনুসারীদের নিকট ইজতেমার ময়দান হস্তান্তর করেন। এসময় বিশ্ব ইজতেমার সাদ অনুসারীদের মধ্যে তাবলীগের শীর্ষ মুরুব্বী প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ, আব্দুস সালাম, মাওলানা আব্দুল্লাহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
সকল কাজ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সকল পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, স্বারষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন ছিল ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে ইজতেমা ময়দানটি প্রথম পর্বের মুরুব্বীদের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মুসুল্লীদের ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করতে হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা মঙ্গলবার বিকেল তিনটার আগেই ইজতেমা ময়দানটি বুঝে নিয়ে, দ্বিতীয় পক্ষের মুরুব্বীদের কাছে হস্তান্তর করেছি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, প্রথম পর্বের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ টিম, গ্যাস সরবরাহ টিম, পানি সরবরাহ টিম, সিটি করপোরেশন, পল্টুন ব্রীজসহ যাবতীয় যে সকল সুবিধা ১ম পর্বের জন্য ছিল তার সবগুলো এ পর্বেও থাকবে। আগে ব্যবহৃত সব সরঞ্জামাদি অক্ষত আছে আমরা তা চেক করেছি। সেখানে বিভিন্ন দপ্তরের কন্ট্রোল রুম, মুসুল্লীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সকল কার্যক্রম আগের মতো বহাল থাকবে। আমরা তাদের খেদমতে থাকবো। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের (প্রশাসনের) কাছে এপক্ষের মাঠ হস্তান্তরের দিন ধার্য রয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার সাদ অনুসারীদের মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে ময়দানটি বুঝে নেয়ার পর আমরা মাঠ গুছানোর পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পাহারা নজমসহ মাঠ পরিচালনায় বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মীদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা যার যার কাজ শুরু করেছেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী বুধবার রাত থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে মুছুল্লীরা এসে ময়দানে জেলাওয়ারী খিত্তায় অবস্থান নিতে থাকবেন। একইদিন বিকেলে বিদেশী মুসুল্লীরাও ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করবেন।
বিশ্ব ইজতেমার সাদ অনুসারী তাবলীগের মুরুব্বী আব্দুস সালাম বলেন, আমরা ইজতেমা ময়দানের সবকিছু ঠিকঠাক মতো বুঝে পেয়েছি। মাঠে এখনও গোন্দো সংস্থার লোকজন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, র্যা ব, পুলিশসহ সকলেই ময়দান এলাকায় দায়িত্বরত আছেন। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ইজতেমা সম্পন্ন হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছি যাতে সাদ সাহেবকে আমাদের ইজতেমায় যোগ দেয়ার সুযোগ দেন। এখন পর্যন্ত আমরা এ ব্যাপারে কোন কর্তৃপক্ষের উত্তর পাইনি।
ইজতেমার প্রথম পর্ব অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃংখলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, শুরুায়ে নিজামের মিডিয়া সমন্বয়কারী মাওলানা হাবিবুল্লাহ রায়হান। তিনি জেলা প্রশাসক, জিএমপি কমিশনার, র্যা বসহ দায়িত্বপালনকারী সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।