গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনটি পদে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান এসব তথ্য জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হননি। কালীগঞ্জের দুই সংসদ সদস্য নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়ে তিনটি পদেই একটি করে প্যানেলকে সমর্থন দিয়েছেন বলে প্রচার হয়েছে।
অপরদিকে, মনোনয়ন জমাদানকারীদের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামীর একজন ও জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থী রয়েছেন।
ফলে, এখানে উপজেলা নির্বাচন জমজমাট ও প্রতিদ্বন্ধীতাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার তথ্য মতে, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা হলেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো: আশরাফি মেহেদী হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো: হাবিবুর রহমান এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন স্বপন।
কালীগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নুরুজ্জামান, মোজাম্মেল হক, এম এ সাদ্দাম হুসাইন ও মোহাম্মদ ফারুক ভূঁইয়া।
এছাড়াও, কালীগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আরো মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাহমুদুল হাসান, জাতীয় পার্টির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মোহাম্মদ শামসুল হুদা।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শর্মিলা রোজারিও, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জুয়েনা আহমেদ, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শর্মিলী দাস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কালীগঞ্জে বর্তমানে দুইজন সংসদ সদস্য রয়েছেন। তাঁরা হলেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান এবং অপরজন নির্বাচনে পরাজিত ও পরে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
দুই সংসদ সদস্যই, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন। একারণে উপজেলা নির্বাচনে দুই এমপির দুটি প্যানেল হয়েছে-এমনটি মনে করছেন অনেকে। ফলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন জমজমাট ও প্রতিদ্বন্ধীতাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নির্বাচনে আখতারুজ্জামান সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন, আশরাফী মেহেদী হাসান (চেয়ারম্যান), মোজাম্মেল হক (ভাইস চেয়ারম্যান) ও শর্মিলী দাস (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান)।
মেহের আফরোজ চুমকি সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন, হাবিবুর রহমান (হাবিব) (চেয়ারম্যান), এম এ সাদ্দাম হুসাইন (ভাইস চেয়ারম্যান) ও জুয়েনা আহমেদ (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
তবে, নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়ে জানার জন্য দুই সংসদ সদস্যের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
নির্বাচন কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা গঠিত। এখানে স্থায়ী ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৯০ টি, কোন অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র নেই। এই উপজেলায় স্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৮৬টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ আছে ১৩টি। সবমিলিয়ে মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৯৯টি।
উপজেলায় পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৬জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ২৪ জন এবং হিজড়া ভোটার ২ জন। মোট ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬২ জন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল। ভোট হবে ৮ মে।