গণবাণী ডটকম: নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নদীতীর পুনর্দখলের চেষ্টা করবেন না। চেষ্টা করলে ভুল করবেন। দখলকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।তিনি শনিবার ঢাকার কামরাঙ্গীরচর খোলামোড়া ঘাটে সীমানা পিলার, ওয়াকওয়ে, নদীতীর রক্ষায় কিওয়াল ও ওয়াকওয়ে অন পাইল নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, ঢাকার চারপাশে সার্কুলার নৌপথ চালু করে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহন সহজতর করা হবে। বুড়িগঙ্গাকে হাতিরঝিলের মতো নয়নাভিরাম করা হবে। বছরখানেকের মধ্যে এ দৃশ্য দেখা যাবে। বুড়িগঙ্গা হবে আনন্দ ও বিনোদনের কেন্দ্র।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বুড়িগঙ্গাসহ দেশের সব নদী দখলমুক্ত করে বাংলাদেশের নদীমাতৃক রূপ তুলে ধরা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুড়িগঙ্গাকে পুরানো রূপে ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ অব্যাহত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী,সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও হাজী মোহাম্মদ সেলিম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদ, কলামিস্ট-পরিবেশবিদ সৈয়দ আবুল মকসুদ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মাবুবব উল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখল ও দূষণমুক্ত করতে সরকার কাজ করছে। এক্ষেত্রে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। নদী রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেই অতীতে নদীগুলো বেদখল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন সরকারগুলো শুধু নদী দখল করেনি, তারা বাঙালির পরিচয়ও বেদখল করার চেষ্টা করেছে। নদী আমাদের ঠিকানা; সে ঠিকানাও পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নদী রক্ষায় শুধু ঢাকার মানুষ নয়; সারাদেশের মানুষও এগিয়ে এসেছেন। আগামী ১০ বছরের মধ্যে বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করে মানুষের ব্যবহারোপযোগী করে তোলা হবে। মানুষের জীবিকার জন্য নদী ব্যবহূত হবে, সেরকম পরিবেশ গড়ে তোলা হবে।
প্রসঙ্গত ঢাকার পার্শ্ববর্তী নদীতীরগুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর পুনর্দখলরোধ এবং দখলমুক্ত অংশের সৌন্দর্য পরিবেশগত উন্নয়ননের লক্ষ্যে নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার স্থাপন, ওয়াকওয়ে, কিওয়াল, ওয়াকওয়ে অন পাইল ইত্যাদি নির্মাণের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) একটি প্রকল্প নিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে গতকাল থেকে ঢাকা নদীবন্দর এলাকায় তিন হাজার ৮০৩টি আরসিসি সীমানা পিলার, রামচন্দ্রপুর থেকে বসিলা ও রায়েরবাজার খাল থেকে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত এক কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, এক কিলোমিটার কিওয়াল এবং দুই দশমিক পাঁচ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে অন পাইল নির্মাণ/স্থাপন করা হবে। উল্লিখিত তিন হাজার ৮০৩টি আরসিসি সীমানা পিলারের মধ্যে দুই হাজার ৩৪০টি সিঙ্গেল পাইল এবং এক হাজার ৪৬৩টি ডাবল পাইলের হবে। এসব সীমানা পিলার নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এগুলোর স্থাপনার কাজ শেষ হবে।