গণবাণী ডট কম:
আগামী তিনদিন শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে ৭. ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর ফের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার সকালে আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান এ তথ্য জানান। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে এই শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হতে পারে। শনিবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে ১৩ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সারাদিন ধরেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকবে। সেই সঙ্গে বয়ে যাচ্ছে হিমেল বাতাস।
রংপুর বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী তিনদিন তা অব্যাহত থাকতে পারে এবং বিস্তার লাভ করতে পারে। শনিবার ও রবিবার রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এরপর নতুন বছরের শুরুতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় শীতের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে সর্বনিম্ন ছিল ১৩. ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, এখন যে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা চলছে, সেটা এই মাসের পুরোটাই, অর্থাৎ আরো কয়েকদিন থাকবে। তিনি জানান, এখন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আশেপাশের এলাকায় বিস্তৃত হতে পারে। সেটার প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও টের পাওয়া যাবে। আরো এক দুইদিন এই তীব্রতা থাকবে বলে তারা মনে করছেন। দেশের বেশিরভাগ স্থানে তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি কমে যেতে পারে।
এ সময় সূর্যের আলো দেখার সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।
মনোয়ার হোসেন আরো বলেন, জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে তারপরে আরেকটা শৈত্যপ্রবাহ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় :
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। এদিন সেখানে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে রংপুর ও রাজশাহীর জেলাগুলোতেও তীব্র শীত রয়েছে।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় মানুষের দুর্ভোগ
প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে নিম্নবিত্ত মানুষজন চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। ঠাণ্ডার সঙ্গে গত কয়েকদিন বৃষ্টি যোগ হওয়ায় ছিন্নমূল ও ফুটপাতে থাকা মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাজধানী ঢাকাতেও অনেককে কাগজ ও অন্যান্য জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে তাপ পোহাতে দেখা গেছে।
ঢাকার কাওরান বাজার এলাকায় ফুটপাতে নিয়মিত ঘুমান জমিরন নেসা। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে ঠাণ্ডার কারণে ঠিক মতো ঘুমাতে পারছেন না। যেখানে ঘুমাতেন, বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেখানেও আর বিছানা করতে পারছেন না।
শহর এলাকায় কুয়াশার দাপট কমলেও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো তা অব্যাহত রয়েছে। ফলে ফেরী ও নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
প্রতিদিন রাতেই মাওয়া ও পাটুরিয়ায় কুয়াশার কারণে কয়েক ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে, যার ফলে পদ্মা নদীর দুই পাড়ে তৈরি হচ্ছে যানজট।
শৈত্যপ্রবাহ আরও তিনদিন, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে
আবহাওয়াবিদরা জানান, ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। ৬ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা নেমে আসলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারাদেশে আজ মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানতঃ শুষ্ক থাকতে পারে। খবর : বিবিসি ও অন্যান্য সূত্র।