গণবাণী ডট কম:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম আতিকের তিন ব্যাংকে প্রায় ৬শ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। আতিকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৯ কোটি টাকা। বার্ষিক আয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বিপুল সম্পদের মালিক হলেও তার নিজের নামে কোনো গাড়ি নেই।
অন্যদিকে আতিকের চেয়ে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের সম্পদ বেশি। তাবিথের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার বেশি। তার বার্ষিক আয় ৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তার ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৩০২ কোটি টাকা। নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় এসব সম্পদ ও দায়দেনার বিবরণী দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থী।
উত্তর সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাতজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বাকিদের উল্লেখযোগ্য সম্পদ নেই। প্রার্থীদের মধ্যে কেউ স্বশিক্ষিত আবার কেউ এমফিল ডিগ্রিধারী। তবে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলাও নেই। গত মঙ্গলবার মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামায় সম্পদ ও দায়দেনার বিবরণ দিয়েছেন প্রার্থীরা।
আতিকুল ইসলাম : গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উত্তর সিটির উপনির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম। সেই সময়ে দেওয়া হলফনামা ১ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গৃহঋণ থাকার কথাও উল্লেখ করেছিলেন আতিক। এবার তার ব্যক্তিগত নামে আইএফআইসি ব্যাংকে ৯৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। সেই সময়ের মতো নিজের নামে বাড়ি থাকলেও নেই কোনো গাড়ি। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তার ১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। আয়ের উত্স্য হচ্ছে- কৃষি খাত, ব্যবসা, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া, মত্স্য চাষ ও ব্যাংক সুদ। আতিকুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদ ৪ কোটি ৮৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ও স্থাবর সম্পদের মূল্যমান ১৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ৫৯১ কোটি ৬ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংকে ফান্ডেড ১৮৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা ও নন-ফান্ডেড ২৪৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংকে ফান্ডেড ৪৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা ও ১৩ কোটি ৯ লাখ টাকা নন-ফান্ডেড এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে ২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা ফান্ডেড ও ৭৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা নন-ফান্ডেড ঋণ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনোটির তিনি চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর অথবা ডিরেক্টর হিসেবে আছেন। বিকম ডিগ্রিধারী আতিকুল ইসলামের নামে বর্তমানে বা অতীতে মামলা হয়নি।
তাবিথ আউয়াল : পেশায় ব্যবসায়ী বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর বাইরে স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৪ দশমিক ২৪ একর কৃষি জমি, ১৬ দশমিক ৪৮ একর অকৃষি জমি, দশমিক ৫৬ একর অন্যান্য জমি। এছাড়া রয়েছে ৯২৪ ও ১ হাজার ৪৩ বর্গফুট আয়তনের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট। বিপুল সম্পদের সঙ্গে রয়েছে বিপুল ঋণও। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তার প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৩০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তিনি ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসসি ডিগ্রিধারী। তার বার্ষিক আয় ৪ কোটি ১২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। আয়ের উত্স হিসেবে তাবিথ আউয়াল কৃষি, বাড়ি/দোকান/ অন্যান্য ভাড়া, ব্যবসা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক থেকে লভ্যাংশ, চাকরি, অন্যান্য খাত উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে তার নামে কোনো মামলা নেই, অতীতেও মামলা ছিল না।
জি এম কামরুল : জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী সাবেক সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা জি এম কামরুল ইসলাম এমফিল ডিগ্রিধারী। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। রয়েছে এটিএস সুলশন নামের প্রতিষ্ঠান। তার বার্ষিক আয় প্রায় ২১ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংকে রয়েছে ২০ লাখ টাকা। রয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ টাকার মূল্যমানের যানবাহন। এছাড়া ইলেকট্রনিক, আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৮ বিঘা কৃষি জমি, ৭ কাঠা অকৃষি জমি এবং সাত কোটি টাকা মূল্যমানের ভবন। তার কোনো দায়দেনা নেই।