গণবাণী ডট কম:
‘কাট’, ‘কপি’ ও ‘পেস্ট’ এর জনক কম্পিউটারের প্রথম যুগের কিংবদন্তি ল্যারি টেসলার ৭৪ বছর বয়সে মারা গেছেন।
১৯৬০ এর দশকের শুরুর দিকে এমন এক সময়ে সিলিকন ভ্যালিতে কাজ করা শুরু করেন টেসলার, যখন সিংহভাগ মানুষই কম্পিউটার ব্যবহার করতে সক্ষম ছিলেন না। পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহার করা সাধারণ মানুষের জন্য অনেক সহজ হয়ে যায় তার আবিষ্কৃত কমান্ড ; ‘কাট’, ‘কপি’ ও ‘পেস্ট’ এর কারণে।
টেসলার তার কর্মজীবনের একটি অংশ কাটিয়েছেন জেরক্স’ এর সাথে। সেই প্রতিষ্ঠানটিও তার প্রতি সম্মান জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি টুইট করেছে: “কাট, কপি, পেস্ট, ফাইন্ড ও রিপ্লেস এবং আরও অনেক কমান্ডের আবিষ্কারক ছিলেন সাবেক গবেষক ল্যারি টেসলার। তার বৈপ্লবিক আইডিয়ার জন্য আজ আপনার কাজ অনেক সহজ।”
ব্যক্তিগত জীবন :
১৯৪৫ সালে নিউ ইয়র্কের ব্রংক্স’এ জন্ম নেন ল্যারি টেসলার। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। স্নাতক শেষে তিনি ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইনে বিশেষজ্ঞ হন। অর্থাৎ, কম্পিউটার ব্যবস্থাকে ব্যবহারকারীর জন্য আরও সহজ করার জন্য কাজ করতেন তিনি।
দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। শুরুতে জেরক্স প্যালো অ্যাল্টো রিসার্চ সেন্টারে কাজ করতেন তিনি। সেখান থেকে তাকে অ্যাপলে নিয়োগ দেন স্টিভ জবস। অ্যাপলেই পরের ১৭ বছর কাজ করেন এবং প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে। অ্যাপল ছাড়ার পর তিনি শিক্ষা বিষয়ক একটি স্টার্ট আপ তৈরি করেন এবং কিছু সময়ের জন্য ইয়াহু আর অ্যামাজনে কাজ করেন।
দূরদর্শী আবিষ্কারক :
ল্যারি টেসলারের সবচেয়ে জনপ্রিয় আবিষ্কার সম্ভবত কাট, কপি ও পেস্ট কমান্ডগুলোই। যতদূর জানা যায়, সনাতন পদ্ধতিতে মানুষ যেভাবে ছাপানো কাগজের লেখা কেটে আঠা দিয়ে অন্য একটি কাগজের ওপর বসাতো, সেই মূলনীতি অনুসরণ করেই তৈরি করা হয় এই কমান্ডগুলো। ১৯৮৩ সালে অ্যাপলের লিসা কম্পিউটারের সফটওয়্যারে এই কমান্ডগুলো রাখা হয়। তার পরের বছরে বাজারে আসা ম্যাকিন্টশেও ছিল এই কমান্ডগুলো। ল্যারি টেসলারের দৃঢ়বিশ্বাস ছিল যে কম্পিউটার সিস্টেমে ‘মোড’ ব্যবহার বন্ধ করা উচিত, যা সেসময় অহরহ ভিত্তিতে ব্যবহার করা হতো।
‘মোড’এর সাহায্যে ব্যবহারকারী সফটওয়্যার ও অ্যাপের এক কাজ থেকে আরেক কাজ করতে পারতেন কিন্তু তা ছিল সময় সাপেক্ষ ও জটিল। টেসলারের ঐ বিশ্বাস এতই দৃঢ় ছিল যে তার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের ঠিকানা ছিল ‘নোমোডস ডট কম।’ তার টুইটার হ্যান্ডেল ছিল ‘@নোমোড’, এমনকি তার গাড়ির লাইসেন্স প্লেটেও লেখা ছিল ‘নো মোড।’