গণবাণী ডট কম:
করোনা মোকাবেলায় চলমান সাধারণ ছুটিতে অঘোষিত লক ডাউনের কারণে কর্মহীন ও অসহায় হয়ে গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘরে থাকা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৯টি পরিবার সরকারের নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। এর মাধ্যমে জেলার প্রায় ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৫ জন মানুষ নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তার আওতায় এসেছে। গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস বা কোভিড ১৯ পরিস্থিতিতে দরিদ্র অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গাজীপুর জেলার অনুকূলে ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ প্রদান করেছে। সোমবার পর্যন্ত ২ হাজার ৯১৪ মেট্টিক টন সরকারি চাউল বরাদ্দ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২ হাজার ৬১৪ মেট্টিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। নগদ সহায়তার মধ্যে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা। জেলায় শিশু খাদ্যের জন্য সহায়তা আসে ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উক্ত বরাদ্দ থেকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গৃহীত কর্মসূচী বাস্তবায়নের কারণে দরিদ্র অসহায় ও কর্মহীণ হয়ে ঘরে থাকা মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তালিকা করে গাজীপুর জেলায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এসব খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। এ লক্ষে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের ত্রাণ শাখা থেকে সরকারের বরাদ্ধকৃত এসব খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ জেলাধীন সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ সমুহ বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তালিকা করে এসব খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে এ পর্যন্ত খাদ্য সামগ্রী হিসেবে ২ হাজার ৯১৪ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৬১৪ মেট্রিক টন চাউল ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সংকটে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় সরকারি খাদ্য সামগ্রী পেয়েছে এক লক্ষ ১৩ হাজার ২৪৯টি পরিবার। এসব পরিবারের মাধ্যমে জেলার মোট ৫ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৮৫ জন মানুষ উপকার লাভ করেছেন। এছাড়া জেলায় ১ কোটি ২২ লাখ ৬২ হাজার টাকা নগদ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১ কোটি ১১ লাখ ৫২ হাজার টাকা উক্ত উপকারভোগীদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রীর সাথে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, জেলায় শিশু খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার খাদ্য সামগ্রী শিশুদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৩ হাজার ১৬১টি শিশু পরিবারকে এই অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, এছাড়াও সরকারের খাদ্য বান্ধব ভিজিডি, ভিজিএফ, ১০ কেজি চাউলসহ নানা কর্মসুচী থেকে মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে। এসব কর্মসূচীর বাইরে অনেক মানুষ সরকারের হেল্প লাইন ৩৩৩ তে এবং জেলা প্রশাসরে হট লাইনে ফোন করে খাদ্য সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। এসব তথ্য আমরা জানার সাথে সাথে সরকারের বর্ণিত খাদ্য সহায়তার বাইরে থাকা, যারা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন এমন ব্যক্তি বা পরিবারকে প্রতিদিন খাদ্য সহায়তা পৌছে দিচ্ছি। হেল্প লাইন ৩৩৩ ও বিভিন্ন হেল্প লাইনের মাধ্যমে তথ্য এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা ঠিকানা অনুযায়ী বাড়ীতে পৌছে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে সোমবার পর্যন্ত ঘরে থাকা ও সামাজিক দুরত্ব বঝায় রাখতে জনসচেতনা কর্মসূচীর অংশ হিসাবে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ২৮৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬০৬টি মামলা দায়ের করেছেন। অর্থ দন্ড করা হয় ৫৮৪ জনকে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে ৩৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫০ টাকা।