গণবাণী ডট কম:
যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ কোটির বেশি।
গত বছরের ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম যখন ‘অজানা’ একটি ভাইরাস সংক্রমণের খবর প্রকাশিত হয়, তখন মানুষ ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেনি যে সেই ভাইরাসটি পরের ৬ মাসের মধ্যে পুরো পৃথিবীকে ওলট পালট করে দেবে।
শুরুর দিকে যখন ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার খবর প্রকাশিত হওয়া শুরু করে তখন বিশ্বের অধিকাংশ দেশের কর্তৃপক্ষই সংক্রমণটিকে ততটা গুরুত্বের সাথে নেয়নি।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই বাড়তে থাকে, তখন পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশ বিভিন্ন রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে থাকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে।
উহান শহরে উদ্ভূত ভাইরাসটি-যেটি বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়, সেটি এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে প্রায় ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটিয়েছে।
৩১শে ডিসেম্বর করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানা যাওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো পর্যন্ত টাইমলাইন সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
৩১শে ডিসেম্বর উহান মিউনিসিপাল কমিশন হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নিউমোনিয়া রোগীদের একটি ক্লাস্টার শনাক্ত করার কথা জানায়। নতুন এক ধরণের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
৪ঠা জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সোশ্যাল মিডিয়ায় সাইটে উহান শহরে নিউমোনিয়া রোগীদের একটি ক্লাস্টারের তথ্য প্রকাশ করে।
৫ই জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন ভাইরাসের মাধ্যমে একটি রোগ ছড়িয়ে পড়ার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ভাইরাস সম্পর্কে চীনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদনে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকা সংক্রান্ত কিছু উপদেশ লিপিবদ্ধ করা হয়।
১২ই জানুয়ারি চীন নভেল করোনাভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স প্রকাশ করে।
১৩ই জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার খবর জানা যায় থাইল্যান্ডে।
২২শে জানুয়ারি ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় - এই তথ্য প্রথমবার নিশ্চিত করে বিবৃতি দেয় চীনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দল।
২৩শে জানুয়ারি ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের শহর উহানকে চীনের মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়।
৩০শে জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।
২রা ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপিন্সে। ততদিনে চীনে তিনশো’র বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে।
ছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
১১-১২ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের কারণে হওয়া রোগের আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় কোভিড-১৯। ততদিনে বিশ্বব্যাপী ১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে।
১৪ই ফেব্রুয়ারি ইউরোপে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয় ফ্রান্সে।
৭ই মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়ায়।
১১ই মার্চ করোনাভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
১৩ই মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষনা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
১৭ই মার্চ ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে একসাথে দেশব্যাপী লকডাউন জারি করে ফ্রান্স।
২৭শে মার্চ পৃথিবীর যে কোনো দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেশি সংখ্যক আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার তথ্য জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে।
৩রা এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ৫০ হাজার মানুষ মারা যায়।
৪ঠা এপ্রিল বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায়।
১১ই এপ্রিল কোভিড-১৯ এ মৃত্যু বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখে।
২৩শে মে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়ায়। খবর : বিবিসি।