গণবাণী ডট কম:
করোনা ভাইরাস উত্তর বিশ্ব এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ অতিদরিদ্র হয়ে গভীর সঙ্কটের মুখে পড়বে। ফলে তীব্র ক্ষুধা ও গভীর দরিদ্রতা তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিবে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন আভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ করোনা ভাইরাসের চেয়ে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে ক্ষুধার কারণে।
প্রতিবেদন অনুসারে, এই মহামারির কারণে বিশ্বের আনুমানিক ১২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র হয়ে পড়বে। ফলে ক্ষুধায় প্রতিদিন অন্তত ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে সাহায্য-সহায়তা কমে যাওয়া, ব্যাপক বেকারত্ব, খাদ্য উৎপাদনে ব্যাহত হওয়া, খাদ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটা- এসব কারণে এ বছর প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অনাহারে পড়তে পারে।
বেশি খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে এমন ১০টি দেশকে চিহ্নিত করেছে দাতব্য সংস্থা অক্সফাম।
এর মধ্যে রয়েছে ইয়েমেন, আফগানিস্তান এবং ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো।
এছাড়া ভেনিজুয়েলা এবং দক্ষিণ সুদানের মতো দেশগুলোতে খাদ্য সংকট চরমে রয়েছে। এ সংকট আরো ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।
২০১৯ সালে আফগানিস্তানে যত মানুষ খাদ্য সংকটে ছিল তার চেয়েও এ বছর আরো বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে। বর্তমানে ৩৫ লাখ মানুষ দেশটিতে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারির কারণে মধ্যম আয়ের দেশ যেমন ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলেও মানুষ না খেয়ে থাকার মত পরিস্থিতিতে চলে যাচ্ছে।
অপরদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে বহু মানুষ চাকরি হারানোয় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে রেমিটেন্স ৮০ শতাংশ কমে গেছে। বেড়ে গেছে খাবারের দাম। সীমান্ত এবং পণ্য সরবরাহ রুট বন্ধ হওয়ায় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দার চেয়ে এখন অনেক দ্রুত অর্থনৈতিক সংকট বেশি ঘনীভূত হচ্ছে। এ সংকটে ৫০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের মুখে পড়তে পারে। ১৯৯০ সালের পর বিশ্বে প্রথম বেড়ে যেতে পারে দারিদ্র্য।
গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, অবস্থার অবনতি ঘটলে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১১ মিলিয়ন মানুষ দরিদ্র হয়ে যেতে পারে। খবর: রয়টার্স, বিবিসি, দ্য টেলিগ্রাফ।