গণবাণী ডট কম:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে যে আসনটিতে মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি লড়ছেন, সেই নন্দীগ্রামে ভোটের আগের দিন ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সেখানে এক হাজারেরও বেশি কেন্দ্রীয় পুলিশের সদস্য আনা হয়েছে।
এখন থেকে ১৪ বছর আগে-এই নন্দীগ্রামেই শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পথ করে নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। এবার তিনি নিজেই লড়ছেন নন্দীগ্রামের বিধানসভা আসনে।
তার প্রতিপক্ষ তারই একসময়কার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র শুভেন্দু অধিকারী-যিনি সম্প্রতি দল বদল করে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, নন্দীগ্রাম আসনের ফলাফলের ওপর মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক ভবিষ্যত অনেকটাই নির্ভর করছে।
আর মমতা ব্যানার্জিকে হারানোর জন্য এখানে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে বিজেপি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নির্বাচনে এবার খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তারা মনে করছেন, খুব সামান্য ব্যবধানেই হয়তো নির্ধারিত হবে জয়-পরাজয়।
এই নির্বাচন নিয়ে ভারতের মিডিয়ায় ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ভারতের বড় বড় টিভি চ্যানেলগুলোর সাংবাদিক-চিত্রগ্রাহকের দল ভিড় করছেন নন্দীগ্রামে। আশপাশের এলাকার হোটেলগুলোতে কোন কক্ষ এখন খালি নেই।
নন্দীগ্রামে গিয়ে দেখা গেল, বাইরে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে।
দোকানপাট-হাটবাজার চলছে, চায়ের দোকানে দেখা যাচ্ছে নানা বয়সী লোকজনের জটলা। কান পাতলে শোনা যায়, নির্বাচন নিয়েই কথা বলছেন তারা।
তবে, আপাতদৃষ্টিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলেও সেখানকার লোকজনের সাথে কথা বলতে গেলে দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে একটা চাপা উদ্বেগ রয়েছে। ভোটের দিন বা তার আগেই অশান্তি হতে পারে এমন আশংকা রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ করছিল।
এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করে বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জিও গত কয়েকদিনে তার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আসছিলেন।
স্থানীয় লোকেরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করছেন, দু-পক্ষই বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে আসছে বলে তারা টের পাচ্ছেন। বহিরাগতদের ঠেকাতে নির্বাচনী এলাকায় ঢোকার পথে প্রশাসন চেকপোস্ট বসিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তায় গাড়ি তল্লাশি করছে। ফেরিঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামগুলোতে টহল দিতে যাচ্ছে।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে দেখা যায়, তাদের মধ্যে কাজ করছে সহিংসতার একটা চাপা আশংকা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই কর্তৃপক্ষ ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় পুলিশের এক হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে নন্দীগ্রাম এলাকায়। তার সাথে রয়েছে রাজ্য পুলিশও। খবর : বিবিসি।