গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকায় অবস্থিত মহিলা, শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে এক বাক প্রতিবন্ধী যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে তার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
যুবতীর নাম মোছা: মিতু (২১)। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। তিনি ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে তিনি কোনাবাড়ী শিশু উন্নয়ন কেন্ত্রে ছিলেন। তাকে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার একটি মামলার ভিকটিম হিসাবে প্রথমে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। পরে সেখানে তার বয়স বেড়ে যাওয়ার পর তাকে মহিলা, শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে কোন এক সময় টয়লেটে যান মিতু। বুধবার সকালে কেন্দ্রের অন্য নারীরা টয়লেটের দরজা খুলে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে তারা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রের সুপার পারভীন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, বুধবার ভোরে টয়লেটে একটি রডের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মিতুর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় কেন্দ্রের অন্য বাসিন্দারা। তারা অফিসের লোকজনকে খবর দেয়। পরে বাসন থানার পুলিশ এসে ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে এবং তা ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
জিএমপি বাসন থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কেন্দ্রের একটি বাথরুমের ভিতর গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ দেখতে পাই। পরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে মরদেহের পরীক্ষা করা হয়। শরীরে কোন আঘাত বা নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস এলাহী বলেন,মরদেহ শালীনতা বঝায় রেখে যে টুকু দেখা যায়, তাতে দেখা গেছে, মরদেহের গলায় ফাঁস লাগানোর দাগ ছাড়া অন্যকোন আঘাত ও সন্দেহজনক কোন কিছুর আলামত পাওয়া যায়নি। বিধি অনুযায়ী একজন নারী পুলিশ সদস্য তার মরদেহ পরীক্ষা করেছেন। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে।
জিএমপি বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মালেক খসরু জানান, সুরতহাল রিপোর্টে মরদেহের শরীরে কোন আঘাতের বা তাকে নির্যাতনের আলামতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই যুবতী আত্মহত্যা করেছেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মহিলা, শিশু ও কিশোরীদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রটি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনাধীন। এখানে নিরাপদ হেফাজতে থাকা মহিলা, শিশু ও কিশোরীদের রাখা হয়। এর আগে এ কেন্দ্র থেকে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ রাত ১২টার দিকে ১৪ জন নিবাসী পালিয়ে যায়। পরে জিএমপি পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের উদ্ধার করে।