গণবাণী ডট কম :
আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ। করোনাভাইরাস সংক্রমণে বৈশ্বিক মহামারির কারণে এবার স্বল্পসংখ্যক হজযাত্রী নিয়ে হজ হচ্ছে সীমিত পরিসরে। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এই ময়দানে আজ ধ্বনিত হবে লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুল্ক।’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)। আজ কাবা শরিফে নতুন গিলাফও পরানো হবে। শুধু সৌদি নাগরিক ও সৌদিতে বসবাসরতদের অংশগ্রহণে এই হজ ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে।
এবার সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না কেউ। মহামারি করোনার কারণে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সার্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে বেশ সীমিত পরিসরে হজের আয়োজন করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৫ লাখ মানুষ হজ পালন করেছেন, এবার সেখানে হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন মাত্র ১০ হাজার জন। তাদের সবাই সৌদি আরবে বসবাসরত।
করোনা ভাইরাস যেন এই হজ পালনের কারণে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য বিশেষ সতর্ক অবস্থানে রয়েছ সৌদি সরকার। এই ১০ হাজার হজ পালনকারীর প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দুই ধাপে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে তাদের। হজ পালনের জন্য যে সকল স্থাপনায় হজ পালনকারীদের যেতে হয়, তার প্রত্যেকটিকে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে দিনে বেশ কয়েকবার পরীক্ষা করা হবে হাজিদের শরীরের তাপমাত্রা।
এ ছাড়াও এবার হাজিরা ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা শরিফের হাজরে আসওয়াদ নামক কালো পাথরে চুমু দেওয়া ও স্পর্শ করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে জমজম কূপের কাছে গিয়ে পানি পানেও থাকছে নিষেধাজ্ঞা। কেননা এই পানিতে ছড়িয়ে যেতে পারে করোনা ভাইরাস। আর সে কারণেই হাজিদের জন্য আলাদা প্লাস্টিকের ব্যাগে করে জমজম কূপের পানি সরবরাহ করা হবে।
শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার জন্যই এবার শয়তানকে পাথর ছোড়ার ক্ষেত্রেও থাকছে ভিন্নতা। ৫০ জনের বেশি হাজি এক সঙ্গে পাথর ছুড়তে পারবেন না। শুধু তাই নয়, সৌদি আরবের সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি)- এর পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেনো পুরো হজের সময় মুসল্লিদের এক মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এমনকি নামাজ ও কাবা শরিফ তাওয়াফ (প্রদক্ষিণ) করার সময়ও তা মেনে চলতে হবে।
এ বছর হজের খবর প্রচারের জন্যও অনুমতি দেয়া হয়নি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোকে। কিন্তু হজে অংশগ্রহণ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের জন্য বিধি নিষেধ আরোপ করলেও হজের অন্যতম মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আরাফাত ময়দানে সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে দেওয়া খুতবা সম্প্রচারের সময় বাংলাসহ মোট ১০টি ভাষায় তা অনুবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খবর : বিবিসি ও অন্যান্য।