গণবাণী ডট কম:
অবশেষে হেফাজতে ইসলামীর মাওলানা আমীর আহমদ শফী বন্দর নগরী চট্রগ্রামের হাটহাজারীর মাদ্রাসায় ছাত্র বিক্ষোভের মুখে তার কর্তৃত্ব হারিয়েছেন। তিনি মাদ্রাসার পরিচালকের পদ ছেড়েছেন। তার ছেলে আনাস মাদানীকেও মাদ্রাসার শিক্ষকের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, দু’দিন ধরে ছাত্র বিক্ষোভের মুখে গত রাতে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি বা শূরা কমিটির বৈঠক করা হয়। গত রাত ১টায় সেই বৈঠক শেষ হলে জানানো হয় যে মাওলানা শফী পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য নোমান ফয়েজী বিবিসিকে বলেছেন, তাদের বৈঠকে উপস্থিত থেকে আহমদ শফী নিজে থেকে সরে গেছেন। মাওলানা শফীকে মাদ্রাসার পরিচালকের পদ ছাড়তে হলেও তাকে মাদ্রাসার উপদেষ্টা হিসাবে রাখা হয়েছে।
ফয়েজী আরও জানিয়েছেন, পরিচালকের পদে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। কয়েকমাস আগে সহকারি পরিচালক হিসাবে শেখ আহমদ নামে যাকে নিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি সহকারি পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করাবেন। পরিচালনা কমিটি এখন নিয়মিত বৈঠক করে মাদ্রাসা পরিচালনা করবেন।
মাওলানা শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসায় বিক্ষোভের মধ্যে দু’দিন আগে পরিচালনা কমিটির বৈঠক থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। তবে, মাওলানা শফীর পক্ষের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, শতবর্ষী আহমদ শফী খুবই অসুস্থ ছিলেন এবং তার কোন কিছু চিন্তা করার বা বোঝার মত পরিস্থিতি ছিল না বলে তারা মনে করেন। ঐ শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, একজন গুরুতর অসুস্থ মানুষকে বিক্ষোভের মুখে জোর করে বৈঠকে রেখে একতরফা সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে, রাত ১টার পর মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির বৈঠক শেষ হলে মাওলানা শফীকে চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাওলানা শফীর সমর্থক শিক্ষকদের অভিযোগ হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে মাদ্রাসায় একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। এজন্য তারা মি: শফীর অনুসারী মাদ্রাসাটির সিনিয়র শিক্ষক জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
মাওলানা বাবুনগরীর সমর্থক শিক্ষকরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে মাদ্রাসার কতৃত্ব নিয়ে দীঘদিন ধরে সেখানে দ্বন্দ্ব চলছিল, দুই পক্ষের সাথে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে। শেষ পর্যন্ত চ্যালেঞ্জের মুখে মি: শফীকে মাদ্রাসার কর্তৃত্ব হারাতে হলো।