গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর পূবাইলে নিজ বসত ঘরের ভিতর স্বামী ও স্ত্রীকে হত্যার ঘটনার রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর। এ ঘটনায় জড়িত মুল হোতাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গেল রাতে মুল হোতা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি দিয়েছে।
পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির জের ধরে ডাবল মার্ডারের ঘটনা ঘটানো হয়েছে জানিয়েছে পিবিআই গাজীপুর জেলা।
নিহতরা হলো, গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানাধীন বসুগাঁও এলাকার আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুল।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ পলাশ। সে গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল সাপমারা এলাকার মোঃ ইদ্রিস আলীর ছেলে।
শুক্রবার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গেল বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে অজ্ঞাতনামা আসামীরা আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুলকে নিজ ঘরের ভিতর ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জাগায় এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে হত্যার পর পালিয়ে যায়। পরে এ বিষয়ে নিহত আবুল কালামের বোন মোসাঃ হেলেনা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে গাজীপুর মহানগর পুলিশের পুবাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ০২ মাস পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার নির্দেশে পিবিআই, গাজীপুর জেলার উপর মামলা তদন্তভার অর্পণ করা হয়। পিবিআই তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ হাফিজুর রহমান (পিপিএম) নিহত ব্যক্তিদ্বয়ের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও আত্মীয় স্বজনের বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। পিবিআই এর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার (বিপিএম বার, পিপিএম) এর তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনা এবং পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগিতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটির তদন্ত শুরু করেন। তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অত্র মামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত নিহত আবুল কালামের আপন ভাগ্নি জামাই মোঃ পলাশকে গেল ১ অক্টোবর রাত সাড়ে ৪ টার দিকে গাজীপুর মহানগর এর পূবাইল থানাধীন সাপমারা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত আসামীকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার জড়িত থাকার বিষয়ে নিজেকে জড়িয়ে অন্যান্য আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। পরবর্তীতে উক্ত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করলে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী তার প্রদত্ত জবানবন্দিতে উল্লেখ করে যে, তার শাশুরীর পৈত্রিক সম্পত্তি উপর নির্মিত ঘর ও জমি তার মামা শ্বশুর নিহত আবুল কালাম ও খালা শ্বাশুরী অত্র মামলার বাদীনি মোসাঃ হেলেনা কর্তৃক বিক্রির জন্য বায়না প্রদান করায় উক্ত জমি পরবর্তীতে যাতে জমি ক্রয়কারী রেজিষ্ট্রি করতে না পারে এজন্য গ্রেফতারকৃত আসামী তার সহযোগী আসামীদের নিয়ে আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুলকে সুকৌশলে রাতের বেলায় ঘুমান্ত অবস্থায় ডাক দিলে ডিসিস্টদ্বয় ঘুম থেকে উঠে দরজা খোলার পর তাদের চোখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে ০২ বছরের শিশু সন্তানের সামনে ধারালো চাপাতি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত জখম করে নির্মমভাবে হত্যা করে। নিহতদের শিশু সন্তান সাফউয়ান (০২) এর আর্তনাদে প্রতিবেশীগন ভোর আনুমানিক ৫ টার দিকে মৃত আবুল কালাম এর বসত ঘরে এসে আবুল কালাম ও তার স্ত্রী পুতুল এর রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত মৃত দেহ দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।