গণবাণী ডট কম :
রবিবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা হরতালে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি গাজীপুরে। কোথাও কোনো পিকেটিং বা হট্টগোলের খবর পাওয়া যায়নি। কিছু জায়গায় সরকার দলীয় মিছিল মিটিং ছাড়া নগরের সর্বত্র ছিল স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান।
হেফাজতের হরতাল ঠেকাতে সকাল থেকেই গাজীপুর মহানগরীর রাজপথে ছিল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে মহানগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের নগরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দখল করে হরতাল বিরোধী মিছিল দিতে থাকে। কোথাও কোথাও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ।
সকাল এগারোটার দিকে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় সড়ক দখল করে মিছিল করছে যুবলীগ নেতা মো. বিল্লাল হোসেন মোল্লাহ। তার মিছিলে অংশ নেয় অন্তত ১ থেকে ২ শত কর্মী। একই সময় টঙ্গী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মটরসাইকেল সোডাউন বের হয়। এর বাইরেও গাজীপুর রাজবাড়ী সড়কে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে, জয়দেবপুর চৌরাস্তা, কোনাবাড়ী, বোর্ড বাজার, পুবাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় মিছিল-মিটিং করার খবর পাওয়া যায়। এসময় তারা প্রত্যেকেই হরতাল বিরোধী অবস্থান নিয়ে বক্তব্য স্লোগান দিতে থাকে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট মোঃ মনির হোসেন জানান, দিনভর নেতাকর্মীরা গাজীপুর রাজবাড়ী সড়কে অবস্থিত আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা মিছিল করেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর আওয়মী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এতে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালন করেছি’।
এদিকে হরতাল ডাক দিলেও নগরের কোথাও কোনো ধরণের পিকেটিংয় বা হট্টোগোলের খবর পাওয়া যায়নি। সড়ক-মহাসড়কে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। এর মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, ঢাকা-নরসিংদী সড়কসহ সর্বত্র যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
এ বিষয়ে গাজীপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান উদ্দিন সরকার বলেন, গাজীপুরে দিনভর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। আমাদের যানবাহন কোথাও কোনো পিকেটিং বা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হয়নি।
হরতাল থাকলেও খোলা ছিল নগরের সকল দোকানপাট। সরকারি অফিস আদালতেও চলে স্বাভাবিক কার্যক্রম। তবে সড়ক, বাস স্ট্যান্ড বা সরকারি কার্যালয়গুলোতে উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম। এর মাঝে জনসাধারণের অনেকের মাঝেই হরতাল নিয়ে কিছুটা আতঙ্ক ছিল বলে জানা যায়।
দুপুর বারোটার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কথা হয় হাসনা ও রুবিনা নামের দুই নারীর সঙ্গে। তারা মামলা সংক্রান্ত কাজে এসেছিলেন গাজীপুর আদালতে। এসময় কথা হলে তারা বলেন, প্রথমে ভাবছিলাম গাড়িঘোড়া চলবো না। পরে দেহি সবই চলে। তা ছাড়া আজকে মামলার ডেট, আসতেই হইবো। তবে রাস্তায় কোনো সমস্যা ছিল না’।
হরতাল থাকলেও আইশৃঙ্খলাকার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে জানান গাজীপুর মহানগরে পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও মিডিয়া) জাকির হাসান। তিনি বলেন, মহানগরীর কোথাও কোন পিকেটিং বা কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দিনভর পুলিশ অত্যন্ত সজাগ থেকে দায়িত্ব পালন করেছে।