গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা এলাকায় ভাত খেতে চাওয়া নিয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে শিক্ষা দিতে স্ত্রীর বড় ভাইয়ের শিশুপুত্রকে অপহরণ করে হত্যার পর মাটিচাপা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত শিশুর নাম সাখাওয়াত হোসেন (৬)। সে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার বড় হযরতপুর এলাকার মোঃ জাফর আলীর ছেলে। সে তার পিতা মাতার সাথে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন ভোগড়া পেয়ারা বাগান এলাকায় মোবারকের বাড়ীতে ভাড়া থাকতো।
গ্রেফতার আসামীর নাম তাহারুল মিয়া (৩৫)। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ থানার জামালপুর গ্রামের ইয়াসিন আলীর ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সাখাওয়াতের পিতার সাথে একই বাড়ীতে ভাড়া থাকতেন।
বৃহস্পতিবার সকালে এসব তথ্য জানান গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) ইব্রাহিম খান।
তিনি আরো জানান, নিহত শিশুর জ্যাঠাতো বোন শারমিনের সঙ্গে দুই বছর আগে তার তাহারুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা মহানগরীর ভোগড়া পেয়ারা বাগান এলাকায় নিহত শাখাওয়াতের পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করতেন। তাহারুল মিয়া রাজ মিস্ত্রির কাজ করে। গত ১৩ মার্চ বিকালে মোঃ তাহারুল মিয়া কাজ থেকে বাসায় ফিরে গোসল করতে যাওয়ার সময় তার শারমিনের কাছে লুঙ্গি চায় এবং পরে ভাত বেরে খাওয়ানোর কথা বলে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় সাখাওয়াতের মা তাহারুলকে বকাঝকা করে।এ সময় তাহারুলের স্ত্রী পাশের ঘরে টিভি দেখতে চলে যায়। এতে তাহারুল আরো রাগান্বিত হয়। পরে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বাসার গেইটের সামনে শিশু সাখাওয়াতকে পেয়ে তাকে নিয়ে দোকানে মজা কিনে দিবে বলে নিয়ে যায়। তারপর ঐদিন সন্ধ্যায় বাড়ীর কাছে সদ্য মাটি ভরাটকৃত ফাঁকা নির্জন জায়গায় সাখাওয়াতকে নিয়ে যায়। পরে সে স্ত্রী ও সাখাওয়োতের মায়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে সাখাওয়াতকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে রাত ৮টার সময় আসামী তাহারুল তার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে শিশু সাখাওয়াতের পরিহিত লুঙ্গি খুলিয়া তার গলায় পেচিয়ে গলায় চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। লাশ যাতে কেউ কোনদিন খুজে না পায় তার জন্য অন্ধকারে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মাটি চাপা দিয়ে দেয়।
এদিকে, শিশুপুত্রকে অনেক খোঁজেও না পেয়ে তার স্বজনেরা বাসন থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।
উপ পুলিশ কমিশনার আরো জানান, গত ১৫ মার্চ বিকেলে স্থানীয় লোকজন ফাঁকা জমিতে মাটি চাপা অবস্থায় শিশুর মরদেহের হাত বাইরে বের হয়ে থাকতে দেখে ৯৯৯ এ ফোন করে। পরে খবর পেয়ে বাসন থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে শিশুর বাবা জাফর আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটি তার ছেলে সাখাওয়াতের বলে সনাক্ত করেন। এ ব্যাপারে তিনি বাসন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে হত্যায় অভিযুক্ত তাহারুল মিয়াকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তাহারুল হত্যা নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।