গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত প্রবাহিত লবলং/লবনদহ নদী দখল ও দূষণ হতে রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য সরকারের চার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি সংষ্থ্যা ও কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের প্রতি রুল জারি করেছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
রুলে বিবাদীগণের ব্যর্থতাকে কেন সংবিধান বিরোধী, বেআইনী, আইন বহির্ভূত এবং জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে জানতে চাওয়া হয়েছে। রুলে আরও জানতে চেয়েছেন যে, লবলং/লবনদহ নদীকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ধারা ৫ অনুযায়ী প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা ও সেই মোতাবেক, ব্যবস্থাপনার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না।
রুলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার আইনজীবি এস. হাসানুল বান্না এডভোকেট।
তিনি আরো জানান, গত ৮ জুন দায়েরকৃত মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেন।
রুলে সিএস জরিপ বা মূল প্রবাহ অনুযায়ী নদীটির সীমানা নির্ধারণপূর্বক সীমানা পিলার স্থাপনের, নদী সীমানায় বিদ্যমান সকল দখলদারদের উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নদীকে রক্ষার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন।
রুল জারীর পাশাপাশি আদালত আইন অনুযায়ী তদন্তপূর্বক লবলং/লবনদহ নদীতে বিদ্যমান দখলদারের এবং এ নদীকে দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ প্রদান করেন। একইসাথে পরিবেশ অধিদপ্তরকে “লাবৃদ্ধা / বলা” নদী সংলগ্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের Effluent Treatment Plant (ETP) কার্যকর আছে কিনা তা পরিবেশ আইনের ধারা ৪(১), ৪(২)(ঙ) অনুযায়ী সার্বক্ষনিক তদারকি ও পর্যবেক্ষণের এবং নদীটির পানির গুণগত মান নিয়মিত পরীক্ষা করার নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবাদীগণ হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব: ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব: স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব: জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক: গাজীপুরের জেলা প্রশাসক : গাজীপুরের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর (গাজীপুর জেলা কার্যালয়) -এর পরিচালক, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান; শ্রীপুর সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার: শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র: স্যালভো কেমিক্যাল লিমিটেড; ক্রাউন উলেন ওয়ার, ক্রাউন গ্রুপ এক্স সিরামিক্স মেঘনা নীট কম্পোজিট: আমান কটন, হ্যামস ওয়াশিং প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ডার্ড কম্পোজিট, ডিগনিটি টেক্সটাইল লিঃ, এবং ইশরাক স্পিনিং মিল প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ।
বেলা’র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং তাঁকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট শামীমা নাসরিন ও বেলা’র আইনজীবি এডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শ্রী সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন জানান, লবনদহ নদীটি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে একই জেলার সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে তুরাগ নদীতে পতিত হয়েছে। নদটির দৈর্ঘ্য ২৩ কিলোমিটার। দেশের অন্যান্য নদীর মতো দখল আর দূষণে এ নদী আজ চরম অস্তিত্ব সংকটে।