গণবাণী ডট কম :
গাজীপুর মহানগরের সদর থানাধীন তিন সড়ক এলাকায় ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে স্টাইলক্রাফট নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-জয়দেবপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।
এদিকে, সড়ক অবরোধের কারণে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পড়েছেন যাত্রী ও পথচারীরা । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে স্টাইলক্রাফট নামের তৈরি পোশাক কারখানাটিত কয়েক মাস পরপরই বেতন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। কারখানাটিতে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। মালিক পক্ষের কাছে জুন, জুলাই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাওনা রয়েছে। বকেয়া বেতন-ভাতা নিয়ে তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এর প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুলাই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে মালিক পক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ আগষ্ট তাদের বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মালিক পক্ষ এক তারিখে বেতন পরিশোধ না করে কারখানা থেকে চলে যায়। পাওনা বকে না পেয়ে গতকাল শ্রমিকরা অসন্তুষ্ট হয়েও বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু আজ বুধবার সকালে কারখানায় কাজে যোগদান করতে এসে শ্রমিকরা কারখানার ঘেটে কারখানায় বন্ধের নোটিশ দেখতে পায়। বকেয়া পরিশোধ না করে কোন কিছু না জানিয়ে এভাবে হঠাৎ রাতে আধারে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেওয়ায় সকালে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন।
কারখানায় কর্মরত লতা সাবিনা ও মল্লিকা সহকয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করেন, চলতি মাসসহ তিন মাসের বেতন বকেয়া থাকায় বাড়ি ভাড়া, দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে বেতন ভাতা পরিশোধে সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাইছেন শ্রমিকরা।
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, বেতন ভাতা পরিশোধের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার মালিকের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ আগষ্ট জুন মাসের বেতন ও ৮ আগষ্ট শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেয়ার কথা। কিন্তু মালিক পক্ষ বেতনাদি পরিশোধ না করেই কারখানা ছয় দিনের বন্ধ ঘোষণা করেন। বুধবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করতে এসে বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে আন্দোলনে নামেন। তারা বিক্ষোভ মিছিল করে জয়দেবপুর ঢাকা সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের দাবি পূরণের জন্য মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে। বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে মালিক পক্ষ জানিয়েছে, বেতনের টাকা সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় কারখানা ছয়দিন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে মালিক এবং শ্রমিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।