নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর) :
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদ কমিটির সভাপতির উপর নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও দায়ীদের বিচার দাবীতে মঙ্গলবার পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপরদিকে, দুপুরে ওই শিক্ষকের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন।
সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন মোঃ নুরুল ইসলাম (৫০)। তিনি বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভ খাঁ আঃ হাই সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও বারিষাব গ্ৰামের সরকার বাড়ি জামে মসজিদের সভাপতি। গত রোববার রাত বারোটায় দিকে নিজের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার দোকান বন্ধ করে বাড়ী ফেরার পথে ৭/৮ জন সন্ত্রাসী এই হামলা চালায়।
হামলাকারীরা সভাপতির দুই হাত একাধিক জায়গায় ভেঙে দেয়, ডান হাতের কব্জির রগ কেটে দেয়, পায়ের হাঁটুর নিচের রগসহ মাংসপেশি কেটে দিয়ে কোমরের নিচের অংশ ভেঙে দিয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচার দাবীতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে এবং বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে একটি মানববন্ধন করেছেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে চরদুর্লভ খান আঃ হাই সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওই শিক্ষকের বারিষাব গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত যায়। সেখান গিয়ে তারা একটি প্রতিবাদ সভায় তাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষকের উপর এই জঘন্য হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পরে গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কাপাসিয়া উপজেলা শাখা ও বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের আয়োজনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কাপাসিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মোঃ আইনউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ রায়হানউদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শামসুল হুদা লিটন, মোঃ মোবারক হোসেন প্রধান, শহিদুল্লাহ আজাদ, মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ। এ সময় বক্তারা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাপাসিয়া থানার ওসির কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেন।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবির সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের স্ত্রী বাদি হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।