গণবাণী ডট কম:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রথম দিনে রোববার গাজীপুরের ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ হয়েছে। প্রথমদিনে গাজীপুর-১, গাজীপুর-২ ও গাজীপুর-৩ সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২৬ জনের প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ঋণ খেলাপীর অভিযোগে গাজীপুর-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রথম দিনে রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই করেন। এসময় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান, বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী প্রার্থী বা তাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৪৪ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাদের মধ্যে গাজীপুর-১ আসনে ৯ জন, গাজীপুর-২ আসনে ১০ ও গাজীপুর-৩ আসনে ৮ জনসহ মোট ২৭ জন প্রার্থীর দাখিল করা কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করা হয়। পরে এসব প্রার্থীর মধ্যে ২৬ জনের প্রার্থিতা বৈধ এবং জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের তিনটি আসনে ২৭ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাছাই করা হয়েছে। এরমধ্যে গাজীপুর ১ আসনের ১ জন প্রার্থীর ঋণ খেলাপী থাকায় মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আগামীকাল গাজীপুর ৪ ও ৫ আসনের মনোনয়ন বাছাই করা হবে ।
গাজীপুর-১ আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন ৯ জন। এ আসনের জাতীয় পার্টির দুইজন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। তারা হলো সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন ও আল আমিন। রিটার্ণিং কর্মকর্তা মনোনয়ন যাচাই বাছাই শেষে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থীরা ঋণ খেলাপী থাকার কারণে বাতিল করেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগসহ বাকী ৮ জনকে বৈধ প্রার্থীরা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুর-১ আসনে বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, তৃণমুল বিএনপি’র দুইজন প্রার্থী, তারা হলো (বিএনপি নেতা তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে) চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী ও মো: আব্দুল জব্বার, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মো. সফিকুল ইসলাম, জাকের পার্টির মো: মানিক সরকার।
গাজীপুর-২ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১২ জন। জমা দিয়েছেন ১০ জন। রিটার্ণিং কর্মকর্তা মনোনয়ন যাচাই বাছাই শেষে সকলের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেন। বৈধ প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান সংসদ সদস্য মো: জাহিদ আহসান রাসেল, আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, জাতীয় পার্টির মো: জয়নাল আবেদীন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত গাজীপুর গাজীপুর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, জাকের পার্টির প্রার্থী রিনা রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির কাজী হাসিবুর রহমান রাব্বী, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ আবু দাউদ মছনবী হায়দার, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এস এম জাহাঙ্গীর আলম, ইসলামী ফ্রৃন্ট বাংলাদেশের মো: আমির হোসাইন ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির রেহানা আক্তার রিনা ।
গাজীপুর-৩ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৮ জন। রিটার্ণিং কর্মকর্তা মনোনয়ন যাচাই বাছাই শেষে সকলের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেন। বৈধ প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা রহমত আলীর মেয়ে রুমানা আলী টুসি, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান, জাসদের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল হক মন্ডল বাচ্চু, জাকের পার্টির প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন, তরিকত ফেডারেশনের মো: জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টির এফ এম সাইফুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম সাখাওয়াত হোসেন খান।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। ৫ জানুয়ারি প্রচার শেষ করে ৭ জানুয়ারি ভোট।