গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন পূর্ব ভুরুলিয়া এলাকায় ঘুমন্ত গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার একমাত্র এজাহারনামীয় আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতার আসামী নিহত গৃহবধূর স্বামী।
নিহত গৃহবধূর নাম রাছুমা খাতুন (৪২)। তিনি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি থানার পূর্ব বাজিতপুর এলাকার মোঃ গোলাম রছুলের মেয়ে।
নিহত গৃহবধূ রাছুমা খাতুন গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন পূর্ব ভুরুলিয়া সাকিনস্থ ভাড়া বাসায় স্বামীর সাথে বসবাস করতেন। গত ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঐ বাসার সামনে সেফটি ট্যাংকির ভিতর থেকে রাছুমা খাতুনের গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে জিএমপি, সদর থানার পুলিশ।
গ্রেফতার আসামীর নাম মোঃ মিনহাজ আলী (৪৫)। তিনি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি থানার দক্ষিন বাসুদেবপুর (তেলিপাড়া) এলাকার মোঃ মমতাজ আলীর ছেলে।
র্যাব বিশেষ অভিযান চালিয়ে রোববার (১০ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর মুগদা থানাধীন মান্ডা বন্ধু বেকারীর শেষ মাথা সাকিনস্থ আব্দুল্লাহ গলির নোয়াখালী বাড়ী হতে মোঃ মিনহাজ আলীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
রোববার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১, গাজীপুর স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্প কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ ইয়াসির আরাফাত হোসেন।
তিনি আরো জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যবর্তী যে কোনো সময় আসামী মিনহাজ আলী পারিবারীক কলহের জের ধরে তার স্ত্রী রাছুমা খাতুনকে গলায় রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে হত্যার ঘটনা গোপন করার জন্য মৃতদেহ বাসার সামনে সেফটি ট্যাংকির ভিতর লুকিয়ে রেখে সে পালিয়ে যায়। উক্ত সময়ে রাছুমা খাতুনের পরিবার তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেয়ে এবং আসামী মিনহাজ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তার কাছ থেকে কোন সদুত্তর না পেয়ে সন্দেহ তৈরী হয়। পরে রাছুমা খাতুনের স্বজনরা ভিকটিমকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা ভিকটিমের বর্তমান বাসার সামনে সেফটি ট্যাংকির ভিতরে বস্তাবন্দি অবস্থায় কিছু একটা দেখতে পায় এবং পরে তারা জিএমপি, সদর থানার পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেফটি ট্যাংকির ভিতর থেকে গলায় রশি দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় রাছুমা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে এই সংক্রান্তে ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে জিএমপি, গাজীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা উম্মোচনের জন্য র্যাব-১, গাজীপুর স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্প কোম্পানী ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, এরই ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর দিবসের শুরুতে রাত ২টার দিকে র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানীর আভিযানিক দল এবং র্যাব সদর দপ্তরের ইন্ট উইং এর সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত মামলার প্রধান আসামী মোঃ মিনহাজ আলী ঢাকার মুগদা থানাধীন মান্ডা বন্ধু বেকারীর শেষ মাথা এলাকায় আত্মগোপন করে আছে। এমন সংবাদের ভিতিত্তে সেখানে অভিযান চালিয়ে আসামী মোঃ মিনহাজ আলীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী মোঃ মিনহাজ আলী ভিকটিম রাছুমা খাতুনের গলায় রশি পেঁচিয়ে টান দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। হত্যার পরে ভিকটিম রাছুমা খাতুন এর লাশ বস্তাবন্দি করে বাসার সামনে সেফটি ট্যাংকির ভিতর ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।