গণবাণী ডট কম:
চার বছর আগে ইরাকে মার্কিন হামলায় নিহত ইরানের বিপ্লবী গার্ডের জেনারেল কাসেম সোলেইমানির সম্মানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তার সমাধির কাছে দুটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ঘটনায় ১০৩ জন নিহত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী ইরিব জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে সাহেব আল-জামান মসজিদের কাছে একটি মিছিলে বিস্ফোরণে আরও ১৭১ জন আহত হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে বিস্ফোরণের কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত এবং ১৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। তবে, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত উত্তেজনার মধ্যে এমন একটি ঘটনা ঘটল। তবে, এই হামলার পেছনে কে থাকতে তা স্পষ্ট করে না বললেও ইরানের কেরমানের ডেপুটি গভর্নরের বরাত দিয়ে ইরিব জানিয়েছে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠীও এর দায় স্বীকার করেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রথম বিস্ফোরণটি হয়েছিল শহীদ সোলাইমানির মাজার থেকে ৭০০ মিটার দূরে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি মাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে এবং যিয়ারতকারীদের যাবার পথ থেকে এমনকি চেক-পোস্টের বাইরে ঘটেছিল।
২০২০ সালে প্রতিবেশী ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত জেনারেল সোলেইমানির স্মরণে ইরানের রাজধানী তেহরানের প্রায় ৮২০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পূর্বে কেরমানে সোলেইমানির কবরস্থানের কাছেই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিতে বুধবার কয়েকশ লোক সমাধির কাছে জড়ো হয়েছিল।
সোলেইমানিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পরই সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হতো। ইরানের বিপ্লবী গার্ডের বিদেশি অপারেশন শাখা কুদস ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে তিনি সমগ্র অঞ্চলে ইরানি নীতির একজন স্থপতি ছিলেন।
ইরনার সাংবাদিক জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরই দ্বিতীয় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে।
বিস্ফোরণের ভয়ানক শব্দ শুনে শহীদ গুলজারের দিকে যিয়ারতের জন্য যাওয়া যাত্রীরা দ্রুত রাস্তা ছেড়ে দেয় যাতে অ্যাম্বুলেন্সগুলো বিস্ফোরণস্থলের দিকে যেতে পারে। কেরমানের জরুরি বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের কেরমান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ইরানের জরুরি সংস্থার প্রধান বলেছেন, কাসেম সোলাইমানির শাহাদতের ৪র্থ বার্ষিকীতে বিস্ফোরণের ঘটনায় কেরমান প্রদেশের সকল চিকিৎসাকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালে তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোলেইমানিকে ‘বিশ্বের যেকোনো স্থানে এক নম্বর সন্ত্রাসী’হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।