গণবাণী ডট কম:
‘২৫ বছর ধরে শিকলবন্দি রতন মিয়া’-এমন সংবাদ গণবাণীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রতন মিয়ার বাড়িতে যান। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে অন্ধকার ঘর থেকে শিকল কেটে তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে ইউএনও বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে রতন মিয়ার বিষয়টি প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। তার নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে রতন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়।তার শারীরিক অবস্থা বুঝে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃক পরিচালিত ‘রোগী কল্যাণ সমিতি’ থেকে তাকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জমির মো. হাসিবুস ছাত্তার জানান, দীর্ঘদিন শিকলবন্দি থাকায় তিনি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তিনি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন। তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তার উত্তর স্বাভাবিকভাবেই দিয়েছেন। মনে হচ্ছে উন্নত চিকিৎসা পেলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
উল্লেখ্য, রতন মিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাটিয়াদী গ্রামের মৃত আবদুল মোমেনের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। রতন মিয়া অবিবাহিত। তিনি পড়াশোনা করেননি। বাড়িতেই কৃষিকাজ করতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে মাথায় আঘাত পেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। প্রথমে স্থানীয় ও পরে ঢাকায় কয়েক দফা চিকিৎসা দিলেও তিনি সুস্থ হননি। পড়ে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করায় তাকে গত ২৫ বছর ধরে একটি কক্ষে শিকলবন্দি করে রাখা হয়।