গণবাণী ডটকম:
মাত্র একটি ফ্লাই ওভার ব্রীজ বদলে দিতে পারে গাজীপুরের লাখ লাখ মানুষের জীবন যাত্রা। মহানগরীর প্রবেশ দ্বারে জয়দেবপুর রেল ক্রসিংয়ে একটি ফ্লাইওভারের অভাবে দৈনিক প্রায় ৯ ঘন্টা কর্মসময় যানজটে আটকে নষ্ট হয়, চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় জেলাবাসীকে। জেলা শহরে আগত সকলকেই অলিখিত ও অলংঘনীয় এ দুর্ভোগ প্রতিদিন মোকাবিলা করতে হয়।
গাজীপুর জেলার সকল কার্যক্রম রাজবাড়ী কেন্দ্রিক। জেলা সদর বলতে এ রাজবাড়ীকেই বুঝায়। এখানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা পর্যায়ের অধিকাংশ সরকারী অফিস, সকল বিচার-আদালত, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় রয়েছে। এসবের আশে পাশেই রয়েছে জেলা পরিষদ কার্যালয়, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়, জেলার একমাত্র স্টেডিয়াম, নামি দামি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলার সবচেয়ে অভিজাত আবাসিক এলাকা প্রভৃতি। ফলে জেলার ও মহানগরীর বিভিন্ন অঞ্চলের জনগোষ্ঠিকে নানা প্রয়োজনে এখানে আসতে হয়। এ জেলার বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিল্পনগরী গাজীপুরে রয়েছে হাজার হাজার শিল্প-কল-কারখানা, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি। দিন দিন গাজীপুরের গুরুত্ব ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। ঢাকাসহ জেলার ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গাজীপুর শহরে প্রবেশের প্রধান এবং একমাত্র সড়ক হচ্ছে শিববাড়ী-জয়দেবপুর-রাজবাড়ী সড়ক। সড়কটির প্রবেশ পথেই মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে জয়দেবপুর রেল ক্রসিং। এ রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণ পাশেই রয়েছে জয়দেবপুর রেল জংশন।
প্রতিবার যদি গড়ে ৬ মিনিট সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে তাহলে প্রতিদিন কমপক্ষ ৯ ঘন্টা নিয়মিত যানজটের কবলে পড়তে হয়। সড়কটি দিনের শুরু থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত যানবাহনে ঠাসা থাকে। তবে অফিস সময়ের শুরুতে ও বিকালে ছুটির পর বিভিন্ন যানবাহন ও রিক্সায় যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। এসময় পায়ে হেটে চলাও দুস্কর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিদ্যালয়গামী ছোট ছোট ছেলে মেয়ে, মহিলাদের অবনর্ণীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়।
গাজীপুর রেল জংশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার মনির হোসেন জানান, অত্যন্ত ব্য¯Í এ জংশন দিয়ে প্রতিদিন ৪৩টি শিডিউল ট্রেন ৮৬ বার আপ-ডাউন পথে যাতায়াত করে। এছাড়া ময়মনসিংহ ডেমু ট্রেন ও তুরাগ ট্রেন এখান থেকে ২ বার করে ৪ বার যাতায়াত করে। এছাড়া রয়েছে আর্মি স্পেশাল ট্রেন, মালবাহী ট্রেন, কলকাতাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন এ জংশন হয়ে যাতায়াত করে। ফলে প্রতিবার ট্রেন যাতায়াত করার জন্য দৈনিক প্রায় ১০০ বার জয়দেবপুর রেল ক্রসিংয়ে সিগন্যাল বার নামিয়ে ৫/৬ মিনিট যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। ফলে এ সময় রেল লাইনের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। অনিচ্ছা সত্তে¡ও এ সময়টা গাজীপুরবাসীর সময় থেকে অনেকটা জোর করে অপচয় হয়ে যায়।
জেলাবাসীর দুঃখ জয়দেবপুর রেলওয়ে ওভারব্রীজ নির্মানে কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।