গণবাণী ডট কম:
ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভির মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিভক্ত তাবলীগ জামাতের মুরুব্বীদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় আগামী ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আলাদাভাবে দুই পক্ষ ইজতেমা আলাদাভাবে আয়োজন করবে। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলীগের দুইপক্ষের নেতাদের সাথে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মাওলানা জুবায়েরপন্থীগণ আগামী ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং মাওলানা সাদপন্থীগণ ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা আয়োজন করবে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সচিবালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তাবলীগের দুইপক্ষের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৈঠকে ইজতেমার উল্লেখিত সময়সূচী চূড়ান্ত করা হয়।
আগামী জানুয়ারি মাসে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা-২০২০ অনুষ্ঠিত হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, এবারও দুই পক্ষের ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব মাওলানা জুবায়েরপন্থীদের ও দ্বিতীয় পর্ব মাওলানা সাদপন্থীদের।
ইজতেমা বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গনমাধ্যমকে বলেন, দুই পক্ষের নেতৃবৃন্দর সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী জানুয়ারি মাসে আলাদাভাবে উভয়পক্ষের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারী দ্বিতীয় পর্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে পরে আবার বৈঠক করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ও অন্যরা।
কাকরাইল মারকাজের মুরব্বি মাওলানা জোবায়ের আহমদের নেতৃত্বে এই বৈঠকে আলেমদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মুফতি রুহুল আমীন, মুফতি নুরুল আমীন, মাওলানা মাহফুজুল হক, প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান, হাজি সেলিম।
মাওলানা সাদ অনুসারীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মুফতি ইজহার, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন ও মাওলানা আশরাফ আলী প্রমুখ।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না। আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা ও তার বহুল বিতর্কিত বক্তব্যের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
ইজতেমার আগে তিন চিল্লার সাথীদের বিশেষ ‘জোড় ইজতেমা’ এবার হবে না বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবারের বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে হলেও মাঠে প্রস্তুতের কাজ আলেম-উলামা ও আলমি শুরার অনুসারী সাথীরা করবেন বলে জানা গেছে।
১৯৬৭ সাল থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমা নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে চলছে। তবে মানুষের বৃদ্ধি কারণে ও যানজটের দুর্ভোগ কমাতে ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে ভাগ করা হয়।
পরবর্তীতে ভারতের বিতর্কিত মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিভিন্ন ভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের কারণে তাবলিগ জামাতে বিরোধ দেখা দেয়। ফলে বিরোধকে কেন্দ্র করে গত বছর দুইপক্ষের আলাদা আলাদা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২০ সালে হবে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা। বিশ্ব ইজতেমা ঈমান-আমল ও মননশীলতার চর্চার পাশাপাশি বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের কাছে পরিচিত করে তুলে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখে।