গণবাণী ডট কম:
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতি দমন সংস্থা অ্যান্টিকরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিটের (আকসু) রায়ে দুই বছরের জন্য সব ফরম্যাট থেকে নিষিদ্ধ হলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি-২০ ও টেস্ট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানো কিংবা অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণের কোনো অভিযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েও তা সংশ্লিষ্ট বোর্ড বা আইসিসির কাছে গোপন করেছেন।
এই নিষেধাজ্ঞা আজ থেকে কাযকর হবে। তবে, সাকিব যদি আইসিসির সকল শর্ত মেনে নেন, তাহলে তিনি আগামী বছরের ২৯ অক্টোবর মাঠে ফিরতে পারবেন।
আইসিসিরি দুর্নীতি-বিরোধী নিয়ম ভঙ্গের তিনটি অভিযোগ সাকিব আল হাসান স্বীকার করে নেয়ার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানালো সংস্থাটি। আইসিসির ওয়েবসাইটে এই সিদ্ধান্তটি জানানো হয়েছে। ম্যাচ ফিক্সিং-এর প্রস্তাব পাওয়ার পর সেটা গোপন করার অভিযোগে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। আইসিসির ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়েছে।
আইসিসি বলছে, আগামী এক বছর তিনি খেলতে পারবেন না, কিন্তু তিনি যদি সাজার সব শর্ত মেনে চলেন তাহলে তিনি ২০২০ সালের ২৯শে অক্টোবর থেকে মাঠে ফিরে আসতে পারবেন। এই শাস্তির ফলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো ধরণের ক্রিকেটে মাঠে নামতে পারবেন না বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। এর অর্থ হল, আগামী বছর অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন না সাকিব।
প্রথম এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটানোর সময়ে নতুন করে কোনো আইন না ভাঙলে পরবর্তী এক বছরের শাস্তি থেকে তিনি রেহাই পাবেন। সেক্ষেত্রে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর পর আবার মাঠে ফেরার সুযোগ পাবেন সাকিব।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানায়, ২০১৮ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে তিন বার সাকিবের কাছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব আসে। কোনোবারই এ বিষয়ে আইসিসিকে কিছু জানাননি এই অলরাউন্ডার।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ চলাকালে দুই বার ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান সাকিব। পরবর্তীতে সে বছরেরই আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ম্যাচের আগেও তাকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন জুয়াড়িরা।
আইসিসির নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাতে হবে। না হয় আইসিসির দুর্নীতি দমন সংস্থা আকসুকে অবহিত করতে হবে। কোনো ক্রিকেটার, ম্যাচ অফিসিয়াল, টিম অফিসিয়ালসহ সরাসরি ক্রিকেটে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া অনৈতিক প্রস্তাব না জানালে, লুকানোর চেষ্টা করলে কিংবা আকসুর জিজ্ঞাসাবাদেও অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে ‘আইসিসি অ্যান্টিকরাপশন’ ধারা ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৪, ২.৪.৫ ও ২.৪.৬ কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ছয় মাস আর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে আইসিসি।
ইতিমধেই তাকে জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন না করার নির্দেশনাও দিয়েছে আইসিসি। এ কারণে অসুস্থ বলে জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দিচ্ছেন না সাকিব।