গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর পূর্ব চান্দনা ও ছোট দেওড়া এলাকায় ডায়রিয়ার মারাত্মক প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অজ্ঞাত কারণে ছড়িয়ে পড়া ডায়রিয়ায় গত পাঁচ দিনে তিন শতাধিক আক্রান্ত হয়েছেন। এক শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবী করেছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালে চিৎিসাধীন অবস্থায় ডায়রিয়ায় কারো মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছে।
আক্রান্ত রোগীদের স্বজনরা দাবী করেছেন, তাদের সবাই পানি পন করার পর থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। একারণে অনেকে এখন নিজেরা সাবমারসিবল টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করছেন। স্থানীয়দের তথ্য মতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃতরা হলেন- নগরীর ছোট দেওড়ার কাজী বাড়ি এলাকার মোস্তফা কামালের বাড়ির ভাড়াটে পেট্রোল পাস্প শ্রমিক মোজাম্মেল হোসেনের স্ত্রী কামরুন্নাহার (২১), একই এলাকার আবুল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটে মাটিকাটা শ্রমিক আবদুল জব্বার (৬০), পূর্ব চান্দনার আলী আকবরের স্ত্রী সুমা আক্তার (৩০), একই এলাকার ছাত্তার বাবুর্চির বাড়ির ভাড়াটে রিকশাচালক আবদুস ছালাম (৫৫) ও আবদুল বাতেনের বাড়ির ভাড়াটে মঞ্জুর হোসেনের ৪ মাসের শিশুপুত্র নাহিদ।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানিয়েছেন, ৮ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৩০৬ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছে। গুরুতর ৬ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। বর্তমানে ৯৪ জন ডায়রিয়ার রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন।রোগীর চাপ সামলাতে আলাদা ডায়রিয়া ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন ও খাওয়ার স্যালাইন মজুদ আছে।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য বিভাগ ধারণা করছে পানি থেকে ওই এলাকায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপদ্রুত এলাকা পরির্শন করেছেন। তিনি আরো জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোন তথ্য হাসপাতালে নেই। একজন নারী ক্যান্সারের রোগী ছিলেন, তিনিও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন, তিনি মারা গেছেন।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: আমির হোসেন রাহাত জানান, ডায়রিায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী আসতে শুরু করলে বিষয়টি ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আমি জানিয়েছি। আমার অনুরোধ ডা. অনুপম সাহার সাহার নেতৃত্বে ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইইডিসিআর ইউনিটের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা পানির ৮ ধরনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার আইসিডিডিআরবিতে পাঠিয়েছেন। তারা এখনো কাজ করছেন। তিনি আরো জানান, ডায়রিয়া সাধারণত পানি বাহিত রোগ। তাই প্রাথমিক ধারণা ‘পানি থেকেই ডায়রিয়া ছড়িয়েছে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে ডায়রিয়ার কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি। ‘
অপরদিকে গাজীপুর স্বাস্থ্য বিভাগ ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় ৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করেছে বলে জানাগেছে।