গণবাণী ডট কম:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের সময় প্রিয়া সাহা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ ও নিপীড়নের কথা তুলে ধরে সাহায্য চাইলে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
শুরুতে সরকারের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেও প্রিয়া সাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আসার পর আর কাউকে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।
সূত্র: বিবিসি।
প্রিয়া সাহার ওই বক্তব্যে সরকার বিব্রত কিনা এমন প্রশ্নে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তারা একে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া আর কিছুই ভাবছেন না।
“এই ধরণের ঘটনা তো দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়ই। কিন্তু এর আগেও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অতীতে অনেকেই অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা প্রতিবারই মোকাবিলা করেছি।”
“এখন প্রিয়া সাহা কি বলল না বলল, এটা নিয়ে আমার মনে হয়না খুব বেশি মাথা ঘামানোর কিছু আছে। তার এইসব কথা বর্তমান সরকারের সেন্টিমেন্টের সাথে যায়না। তাই এ নিয়ে বিব্রত বা বিচলিত হওয়ার কিছু নাই।”
আওয়ামী লীগ দাবি করে একমাত্র তারাই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় সবচেয়ে বেশি তৎপর এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের বিষয়টি তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহার এই বক্তব্য কি দলকে অস্বস্তির মুখে ফেলেছে?
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এটাতে দল কোন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে আমি মনে করিনা। এমন বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে … প্রিয়া সাহা যা বলেছেন মিথ্যা বলেছেন, দেশকে ছোট করেছেন।”
তবে ভেতরে ভেতরে সরকার এই ঘটনায় যথেষ্ট বিব্রত বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জুবেয়দা নাসরিন মনে করেন, ক্ষমতাসীন দল বিশ্বব্যাপী নিজেদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বলে আসলেও একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে প্রিয়া সাহার এমন বক্তব্য অবশ্যই দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।
আন্তর্জাতিক নজর থাকায় সরকার চাইলেও এ বিষয়ে কঠোর হতে পারছেনা বলে জানান মিজ নাসরিন।
“এখন যদি প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যায়, তাহলে তিনি যাদের কাছে এই অভিযোগ করেছেন, সেই দেশের কাছে আসলেও মনে হতে পারে যে এদেশে সংখ্যালঘুরা হয়তো সত্যিই নিপীড়নের শিকার।”
“আবার সরকার প্রিয়া সাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে যে এখানে সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। এটা বাংলাদেশের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক অবস্থানকেও ইঙ্গিত করে।”