গণবাণী ডট কম:
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আর কেউ আক্রান্ত হয়নি। একই সময়ে চিকিৎসাধীন কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দেশে অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৫ জন। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ী ফিরেছেন মোট ১৫ জন।
শনিবার (২৮ মার্চ) বেলা ১২টা ১০ মিনিটে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
পরে এ ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে যুক্ত হোন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহেদ মালিক। তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ৫০০টি ভেন্টিলেটর আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে এবং আরো আসার পথে রয়েছে। প্রচুর সংখ্যক পিপি আমাদের হাতে আছে এবং প্রতিদিন হাজার হাজার টিপি আমাদের হাতে আসছে এবং সেগুলো আমরা বিতরণ করছি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট কাজ করে যাচ্ছে। যারা বিদেশ থেকে এসেছে, এটা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই, যারা আগে আসছে, এখনো আসছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে তাদের শিপমেন্ট বাতিল হয়েছে, এটা তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করে দিতে পারবে না।
এসময় মন্ত্রী গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, বিভ্রান্তিকর নিউজ প্রচার করা উচিত না।
এসময় মন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগত শিষ্টাচার বজায় রাখা, হাঁচি-কাশি দিয়ে হাত বা রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখা, ব্যক্তিগত দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি মেনে চলা।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক ভালো আছে আমরা ভালো রাখতে চাই সকলে মিলে কাজ করলে আমরা এই সংকট থেকে উত্তরণ হতে পারব ইনশাল্লাহ।
ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক আরো জানান, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বমোট ১০৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় আমরা আর কোনো আক্রান্ত রোগী পাইনি। অতএব আক্রান্ত যা ছিল তাই আছে। দেশে মোট নিশ্চিত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮। আমরা বরং একটা সুখবর বলতে চাই, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজন কোভিড আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ এ পর্যন্ত ১৫ জন কোভিড মুক্ত হয়েছেন।’
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘যারা কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন এবং রোগ নির্মূল হয়েছে তাদের পর্যালোচনা করে দেখেছি, তারা সর্বোচ্চ ১৬ দিন হাসপাতালে ছিলেন। যখন থেকে তাদের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিয়েছে। তাদেরকে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। একজন ছিলেন কিডনি সমস্যাজনিত তাকে আমরা ডায়ালাইসিস করেছি।’
তিনি জানান, যাদের বয়স ৬০ এর বেশি তারা ঘরের একেবারেই ঘরের বাইরে যাবেন না। গত২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে ৩৪৫০ কল এসেছে, এর সবই কোভিড-১৯ সংক্রান্ত।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ১৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে সংযোজিত হয়েছে ৪৬ হাজার ৪৮৪ জন। বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ২৩ হাজার ৩৩৫। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে যুক্ত হয়েছে ২ হাজার ৫০১ জন।’
দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বমোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৯৩২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩৯৬। দক্ষিণ এশিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১০৫। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে যুক্ত হয়েছে ২৬ জন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, বিশ্বের সব দেশেই এখন কোভিডের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রকেই এখন এপিসেন্টার (কেন্দ্রস্থল) হিসেবে বলা হচ্ছে। আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি, সেগুলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। তবে সবকিছুর সফলতা নির্ভর করবে জনগণ নির্দেশনা কতটুকু মেনে চলেছে তার ওপর। যেসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে আমি অনুরোধ করব আমরা সকলেই যেন সেগুলো মেনে চলি।’
এসময় তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান।