কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি :
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ঠান্ডা জ্বর নিয়ে মারা যাওয়া নারী ও যুবক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এ তাদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য জানাগেছে।
জানা যায়, গত সোমবার (৬ এপ্রিল) সকালে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত উপজেলার তরগাঁও গ্রামের অধিবাসী এক নারীর (৩৫) মৃত্যু হয়। তিনি দুই সন্তানের জননী ছিলেন।
এবিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ আবদুস সালাম সরকার তখন জানিয়েছিলেন, ওই প্রায় তিন বছর যাবৎ শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার জ্বর ও সর্দি কাশি ছিল না। মৃত্যুর আগে তিন দিন যাবৎ তার শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে হাসপাতালে না এসে স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়েছিলেন ও ইনজেকশন নিয়েছিলেন।
তারপরেও অধিক সতর্কতার জন্য ওই নারী ও তার স্বামীসহ পরিবারের ৫ সদস্যদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে, এ নারীর দাফন স্বাভাবিক নিয়মে অনুষ্ঠিত হয়।
এর একদিন পরে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে (৮ এপ্রিল) কাপাসিয়ার টোক ইউনিয়নের উলুসারা গ্রামের এক যুবক জ্বর সর্দি কাশি উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করে। ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক নারায়ণগঞ্জে একটি একটি ফার্মেসীতে কাজ করত।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম সরকার জানিয়েছিলেন, ওই যুবক নারায়ণগঞ্জে একটি ফার্মেসীতে কাজ করতো। ২১দিন আগে সে বাড়িতে আসে। জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে সে বাড়িতে ছিল। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তবে তার শ্বাসকষ্ট ছিল না। যদি শ্বাসকষ্ট থাকত তাহলে সে তো হাসপাতালেই আসতো। যেহেতু তার বয়স কম, তাই আমরা মনে করছি তার করোনা হয়ে থাকতে পারে।
এজন্য সতর্কতার অংশ হিসাবে স্বাস্থ্য বিভাগ পক্ষ থেকে মৃত যুবক ও তার বাবা, মা, ভাই বোনসহ পরিবারের ৬ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই যুবকের দাফন করোনা আক্রান্ত রোগীর মতোই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আইইডিসিআরের প্রটোকল অনুযায়ী সম্পন্ন হয়।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম সরকার শুক্রবার সকালে জানান, গত বৃহস্পতিবার ঠান্ডা জ্বর ইত্যাদি নিয়ে মারা যাওয়া দুইজন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের রক্তের নমুনার পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। ফলাফল অনুযায়ী তাদের সকলের করোনা নেগেটিভ। অর্থাৎ মৃত দুই ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। কিন্তু করোনা সন্দেহের কারণে দুই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের নানা রকম সমস্যা ও প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। তাদের থাকতে হয়েছে হোম কোয়ারেন্টাইনে। ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলের আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।