গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে এক নারী অসুস্থ হয়ে বাড়ীর পাশে ফার্মেসীতে প্রেসার মাপতে ও ঔষধ আনতে যান। পথে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর ৫৪নং ওয়ার্ডের মোল্লাবাড়ি সড়কে নিজ বাড়ির সামনে রাস্তায় পড়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কিন্তু তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এমন সন্দেহে তার মরদেহ কেউ নিতে আসেনি।
নির্জন রাস্তায় প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে পড়ে থাকে হতভাগ্য ঐ নারীর লাশ। মায়ের মারা যাওয়রার খবর পেয়ে ছেলে-মেয়ে এবং তার স্বজনরা লাশ নিতে কেউ এগিয়ে আসেনি। সভ্যতার এমন উৎকর্ষের মধ্যেও রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে আতংকিত হয়ে এলাকার লোকজন গাঁ ঢাকা দেয়। তারা লাশের ধারে কাছেও আসেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান গাজীপুর সিটি মেয়র এ্যাডবোকেট মো: জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় হাজী কছিমউদ্দিন ফাউন্ডেশনের ৩০জন সদস্য। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে রাত দেড়টার দিকে মরদেহ থেকে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। তারপর হাজী কছিমউদ্দিন ফাউন্ডেশনের কর্মীরা মৃত নারীর মরদেহ দাফনের আয়োজন করেন।
স্থানীয়রা জানা যায়, হতভাগ্য নারী টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে একা বসবাস করতেন। ছেলে-মেয়েরা কেউই এখানে থাকেন না। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজ বাড়ির সামনের থাকা একটি ঔষধের দোকানে ব্লাড প্রেশার মাপতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তবে খবর পেয়েও মৃত নারী করোনাভাইরাস সক্রমণে মারা গেছেন এমন সন্দেহে লাশ গ্রহণ করতে আসেনি ছেলে-মেয়ে ও স্বজনেরা। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন বিধি মেনে নমুনা সংগ্রহ করেন। বুধবার সকালে ওই নারীর দাফন করা হয়।
হাজী কছিমউদ্দিন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জি. এম এম হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, অসুস্থ হয়ে একজন নারী রাস্তায় পড়ে আছে, শুনে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। মৃত নারীর ছেলে-মেয়ে ও স্বজনরা খবর পেয়েও লাশ গ্রহণ করতে আসেনি। পরে আইইডিসিআর এর সদস্যরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেলে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা মৃত নারীর লাশ দাফন করেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ওসি এমদাদুল হক জানান, মৃত নারী বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। তিনি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত নারীর ছেলে-মেয়েরা খবর পেয়েও দুরে থাকায় কেউে আসেনি। তবে, উক্ত নারীর এক বোন ও ভগ্নিপতি পরে এসেছিলেন।