গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীতে সোমবারও লকডাউন উপেক্ষা করে একটি বন্ধ কারখানা খোলার তারিখ ঘোষণা ও শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের দাবীতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ, পার্শ্ববর্তী কয়েকটি কারখানা ভাংচুর, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল এবং টায়ারে অগ্নিসংযোগ করেছে। এসময় পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশসহ অন্ততঃ ৮জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৫ রাউন্ড টিয়ার সেল ছুড়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, গাজীপুর মহনগরীর ভোগড়া এলাকার স্টাইলিশ গার্মেন্টস কারখানার কর্তৃপক্ষ গত ৩১ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১লা এপ্রিল হতে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। যদিও কারখানাটিতে ১ এপ্রিলের পরও কিছুদিন পর্যন্ত উৎপাদন অব্যাহত ছিল। কিন্তু কারখানাটি কবে নাগাদ খোলা হবে তা ঘোষণা দেয়নি মালিক পক্ষ। কারাখানাটি লে-অফ ঘোষণার আগে ৩০জন শ্রমিকের বেতন এবং ৮০জন স্টাফের ৬০শতাংশ বেতন বকেয়া ছিল। শ্রমিকরা ওই কারখানা চালু করার নির্ধারিত তারিখ ঘোষণা এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনভাতাসহ পাওনাদি পরিশোধের দাবীতে রবিবার বিক্ষোভ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। কিন্তু মালিক পক্ষের কোন সাড়া না পেয়ে শ্রমিকরা সোমবার পুনরায় সকাল ৮টার দিকে কারখানার সামনে এসে জড়ো হয়ে একপর্যায়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জালাল উদ্দিন জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এসময় বিক্ষোভকারীরা স্টাইলিশ কারখানার আশপাশের ভলমন্ট ফ্যাশন, ক্রাউন ফ্যাশন, টেকনো ফাইবার পোশাক কারখানার কর্মরত শ্রমিকদেরকে কাজ বন্ধ রেখে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহবান জানায় এবং ওইসব কারখানায় ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এতে ওই কারখানাগুলোর দরজা জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর হয়। একপর্যায়ে তারা ক্রাউন ফ্যাশন কারখানার সামনে মহাসড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা ৩টি মোটর সাইকেল ও ৮টি বাইসাইকেলে জড়ো করে সেগুলোতে অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অবরোধকারীদের মহাসড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছুঁড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ অবরোধকারীদের লাঠিচার্জ ও ধাওয়া করলে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে পুলিশসহ অন্ততঃ ৮জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৫ রাউন্ড টিয়ার সেল ছুড়ে বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।