গণবাণী ডট কম:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অ্যারিজোনা রাজ্যের পর জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যেও জয় পাওয়ার মাধ্যমে ৩০৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পেলেন জো বাইডেন। অন্যদিকে নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে জয় পেয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে পড়েছে ২৩২টি ভোট।
বাইডেনের জয় নিশ্চিত হলেও ট্রাম্প এখনো পরাজয় স্বীকার করতে নারাজ৷ ভোটে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তিনি এখনো অনড় অবস্থানে রয়েছেন। এদিকে রিপাবলিকান দলের অনেক নেতা বাইডেনের সঙ্গে সহযোগিতার পক্ষে সওয়াল করছেন৷ এমনি পরিস্থিতিতে শুক্রবার তিনি করোনা ভাইরাস নিয়ে এক বক্তৃতায় তিনি হোয়াইট হাউজ প্রশাসনে পরিবর্তনের ইংগিত দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাবার পর, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, মূলতঃ নীরব থেকে ফলাফলকে অস্বীকার করে চলেছেন। তবে টুইটারে তিনি নীরব থাকেননি, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি নিয়ে টুইট করে চলেছেন, তবে তাঁর দাবির স্বপক্ষে কোন প্রমান এখনো অব্দি মেলেনি।
দীর্ঘদিনের নীরবতার পর, শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) নির্বাচনের ফল ঘোষণার এক সপ্তাহ পর করোনা ভাইরাস নিয়ে “অপারেশন ওয়ারপ স্পীড” নামে এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন তিনি। এসময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে করোনা রোগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সাফল্য ও পদক্ষেপ নেবার কথা ব্যক্ত করেন। তিনি তাঁর পরাজয় স্বীকার না করলেও ২০ তারিখের পর দায়িত্বে থাকছেন না, এমন একটা আভাষ পাওয়া যায় তার বক্তব্যে। বক্তব্যে তিনি বলেছেন, তাঁর প্রশাসন নুতন কোন লক ডাউন জারি করবে না। তিনি জানান, এই প্রশাসন কোন লক ডাউন জারি করবে না, তবে সময় বলবে পরের প্রশাসন কি করবে। প্রকাশ্যে শীগ্রই ক্ষমতা ছাড়বার কথা ব্যক্ত না করলেও, তাঁর কথায় পরবর্তী প্রশাসনের ইঙ্গিত রয়েছে। তবে, এসময় তিনি নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়ার বিষয়ে কোন কথা বলেননি।
ট্রাম্প ব্যাপক নির্বাচনি অনিয়মের অভিযোগ করে চললেও কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারছেন না৷ ফলে এখনো পর্যন্ত আদালতেও তাঁর অভিযোগ ধোপে টিকছে না৷ এমনকি অ্যারিজোনা রাজ্যের কিছু অংশে নতুন করে ভোটগণনা করে সামান্য কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে, সার্বিক ফলের উপর যার কোনো প্রভাব পড়ছে না৷ মার্কিন প্রশাসনের সবচেয়ে উচ্চপদস্থ সাইবার নিরাপত্তা এবং নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশের ইতিহাসে এটাই ছিল সবচেয়ে নিরাপদ নির্বাচন৷
এখনো পর্যন্ত রিপাবলিকান দলের স্বীকৃতি না পেলেও বাইডেন অবিচল থেকে ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি করে চলেছেন৷ প্রথা অনুযায়ী জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নামের ফেডারেল কর্তৃপক্ষ এখনো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় নি এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ধার্য বাজেট হস্তান্তর করে নি৷ ভবিষ্যৎ বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ রন ক্লেইন এমএসএনবিসি নেটওয়ার্ককে বলেন, ঠিক সময়ে এই অর্থ হাতে পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ বিশেষ করে আগামী বছরের শুরুতে দেশে করোনা টিকা প্রদানের সরকারি পরিকল্পনা কার্যকর করতে হলে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে, বলেন ক্লেইন৷
বাইডেন টিমের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সহযোগিতার অভাবের কারণে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষে ডেমোক্র্যাটিক দলের শীর্ষ দুই নেতা ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছেন৷ নিম্ন কক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও উচ্চ কক্ষে দলের নেতা চাক শুমার সেইসঙ্গে রিপাবলিকান দলের উদ্দেশ্যে ট্রাম্পের মনোভাব উপেক্ষা করে দেশের জরুরি পরিস্থিতির স্বার্থে সঠিক আচরণের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁদের মতে, করোনা মহামারির ফলে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির সংকটের মোকাবিলা করা অত্যন্ত জরুরি৷