গণবাণী ডট কম:
দেশে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০ হাজার ৩৮৫ জনে।
বিবিসি‘র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা টানা তৃতীয় দিনের মতো একশোর উপরে অবস্থান করছে। তৃতীয় দিনে এসে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুর সংখ্যা হয়েছে ১০২ জন। এর আগের দুইদিন ১০১ জন করে মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চলতি এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত তিন দিনে মৃত্যু হল মোট ৩০৪ জনের।
দেশে গত তিন দিনের মৃত্যুহার বিবেচনা করলে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রতি ১৫ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। আর এপ্রিল মাসের মৃত্যু হার বিবেচনা করলে, করোনা আক্রান্ত হয়ে এই মাসে প্রতি ১৮ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে।
দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে কারও মৃত্যুর কথা সর্বপ্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল গত বছরের ১৮ই মার্চ। তবে তিন আগে পর্যন্ত এই সংক্রমণ শুরুর পর গত ১৩ মাসে মৃতের সংখ্যা এর আগে কখনোই তিন অংক ছোঁয়নি।
অপরদিকে, শনিবারই বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি। ‘মহামারি সর্বোচ্চ মাত্রার সংক্রমণের দিকে এগোচ্ছে’ বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সতর্কবাণী উচ্চারণের পরদিনই বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর এই তথ্য জানা গেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮ হাজার ৯২৮ জনের। তাদের মধ্যে থেকে দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৯৮ জন। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ।
অন্যদিকে, গত একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ১২১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ রাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন। দেশে বেশ কিছুদিন যাবৎ করোনা ভাইরাসে মৃত্যু এবং শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ”নতুন শনাক্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। বিশ্বজুড়ে প্রতি সপ্তাহে নতুন শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা গত দুইমাসে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”
গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে কাউকে শনাক্ত করার তথ্য দিয়েছিলো স্বাস্থ্য বিভাগ।
এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশ’র ঘরে নেমে এসেছিল।
তবে এ বছর মার্চের শুরু থেকেই শনাক্তে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই সাথে বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। যদিও গত কয়েকদিনে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১০২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই রয়েছেন ৬৮ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ২২, রাজশাহীতে ৩, খুলনায় ১, বরিশালে ৪ ও ময়মনসিংহে ৪ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে ৯৭ জন হাসপাতালে মারা গেছেন। বাড়িতে ৫ জন মারা যান। এর মধ্যে পুরুষ ৫৯ জন ও নারী ৪৩ জন।