গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আলোচিত মেয়র প্রার্থী, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অ্যাড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বাতিল হওয়া মনোনয়ন পত্রের বৈধতা ফিরে পাওয়ার আশায় মঙ্গলবার বিকালে আপীল করেছেন। আজ রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আপীল কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম।
বিভাগীয় কমিশনার জানান, আজকে মোট ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপীল করেছেন। তাদের মধ্যে একজন মেয়র, একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ৫ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আপিল করেছেন।
তিনি আরো জানান, আগামী তিনদিনের মধ্যে আপিল নিস্পত্তি হবে।
এর আগে আজ বিকালে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, রবিবার (৩০ এপ্রিল) মনোনয়ন বাছাইকালে ঋণ খেলাপীসহ অন্যান্য কারণে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী, ৬ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ১৭ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। তাদের মধ্যে আপিলের উদ্দেশ্যে সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করেছেন ২০ জন।
তিনি আরো জানান, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আপিল করার জন্য সার্টিফাইড কপি চেয়ে আবেদন করেছেন। বাছাইকালে বাতিল হওয়া মেয়র পদের অপর দুই প্রার্থী মোঃ অলিউর রহমান ও মোহাম্মদ আবুল হোসেন সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদন করেননি।
এছাড়া সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী আয়েশা আক্তার, মোছাম্মৎ পারুল বেগম, মোছাম্মৎ রোকসানা পারভীন, ফেরদৌসি বেগম এবং সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ হামিদুর রহমান, আনিসুর রহমান, মোঃ হোসেন, মোহাম্মদ শাহিন আলম, মোঃ মোশাররফ হোসেন, মোঃ মোশাররফ হোসেন, মোঃ খোরশেদ আলম, মোঃ হানিফ উদ্দিন তালুকদার, সালেহ আহমেদ, শাজাহান হাজী, মোহাম্মদ আলী, জামাল খান, মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন সরকার ও আবুল কাশেম সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদন করেছেন।
ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, যারা আবেদন করেছেন তাদেরকে সার্টিফাইড কপি প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাছাইকালে একটি খেলাপি ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার হওয়ার কারণে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে ওই কর্মকর্তা এই আদেশ দেন। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন ফরম বাছাইকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদে এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন, তার সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি।
এ সময় উপস্থিত জাহাঙ্গীর আলম ও তার আইনজীবী রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী জামিনদার কখনও ঋণখেলাপি হয় না। তাছাড়া খেলাপি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান ঋণ তফসিলিকরণের জন্য ইতোমধ্যে ডাউন পেমেন্টের টাকা জমা দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক সেই টাকা বুঝে পেছে। ঋণটি পুন:তফসিলি করণের জন্য আবেদন করেছে।
এসময় জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, শতভাগ রফতানি মূখী একটি কোরিয়ান শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের জমি বন্ধক রেখেছিলাম। আমি ওই টাকা নিজে নিইনি এবং প্রতিষ্ঠানটি ওই টাকা পরিশোধ করেছে।
এসময় সেখানে উপস্থিত ব্যাংকের কর্মকর্তা জানান, তিনি ডাউন পেমেন্টর টাকা জমা দিয়েছেন। আবেদন করেছেন। এর একটি প্রসিডিউর আছে। আজ ব্যাংকের বোর্ড সভা আছে। সেখানে বিষয়টি আলোচনার কথা রয়েছে। এসময় রিটার্নিং কর্মকর্তা তার কাছে জানতে চান, ঐ প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি নয়, এটা আপনি বলতে পারেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, বোর্ড সভায় অনুমোদন হলে বলা যাবে।
এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন, তার সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হলো।’