গণবাণী ডট কম,
বাঁকা পা তথা মুগুর পা নিয়ে জন্মানো কোন অভিশাপ নয়। চিকিৎসায় সম্পূর্ণরূপে মুগুর পা ভাল হয়। তবে যত কম বয়সে এর চিকিৎসা শুরু করা যায়, তত দ্রুত ভাল হয়ে ওঠে। বেশি বয়সে চিকিৎসা শুরু করলে অনেক সময় অস্ত্রপচারও করতে হয়।
বুধবার গাজীপুরে ‘বিশ্ব ক্লাব ফুট’ দিবসের র্যা লি শেষে পনসেটি চিকিৎসক মো: জামিল হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, শিশুর পায়ের যে সব জন্মগত ক্রটি নিয়ে জন্মাতে পারে এর মধ্যে ক্লাব ফুট বা মুগুর পা অন্যতম। এর ফলে পায়ের গোড়ালির অস্থিসন্ধির হাড়ের অবস্থানগত তারতম্যের জন্য পা ভেতরের দিকে ভাঁজ হয়ে থাকে। এসকল শিশুর চিকিৎসায় বৈজ্ঞানিক ডাঃ ইগনাসিও পনসেটি যে চিকিৎসা পদ্ধতি অবিস্থার করেন তা তার নামানুসারে পনসেটি চিকিৎসা পদ্ধতি নামে পরিচিত। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে এবং পরের বছর গাজীপুরেও এ চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু হয়। এখন দেশের ৩২টি জেলায় এ চিকিৎসা কার্যক্রম চালু রয়েছে এবং ৩২হাজার ৭৮৮ জন শিশুকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরের প্রায় এক হাজার শিশু চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমেরিকার মিরাকল ফিট নামক বেসরকারী সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় সেন্টক্রেড ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের ওয়াক ফর লাইফ প্রকল্পের মাধ্যমে এ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। গরীব এবং অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুকে এ চিকিৎসা বিনামূল্যে দেয়া হয়।
সিরাজগঞ্জের সাহাজাতপুর এলাকার মমতাজ একসময় বসবাস করতেন গাজীপুর মহানগরের লক্ষীপুরা এলাকায়। নাতী আলিফকে ( সাড়ে ৩ বছর) নিয়ে তিনি সেন্টারে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আলিফের বাবা- মা পোশাক কারখানায় চাকুরি করে তাই তিনি নাতীকে নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, আলিফ মুগুর পা নিয়ে জন্মেছিল। আলিফের ৪০ দিন বয়স থেকে এ সেন্টারে চিকিৎসা শুরু হয়। এখন আলিফ পুরোপুরি সুস্থ্য। শ্রীপুরের মাওনা এলাকার জুলেনা বেগম তার ছেলে ওবায়দুল্লাহকে নিয়ে সেন্টারে আসেন । তিনি জানান, এখানে মাত্র ২১ দিন বয়স থেকে চিকিৎসা নিয়ে ৪ মাসে তার বাচ্চা পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে ওঠেছে। শুধু আলিফ বা ওবায়দুল্লাহ নয়, গাজীপুরের এ সেন্টার থেকে ১৩ বছরে প্রায় এক হাজার শিশু চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।
গাজীপুর শহরের প্রকৌশল ভবনের ৫ম তলায় এ চিকিৎসা সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রতি বুধবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে মুগুর পা শিশুদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। সেবা নিতে আগ্রহীদের এ ঠিকানায় বা মোবাইল ০১৮৪৭ ০৬৭৭৩৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসক মো: জামিল হোসেন।