গণবাণী ডট কম :
বহুল আলোচিত গাজীপুরের সিনিয়র সাংবাদিক শেখ মঞ্জুর হোসেন মিলনকে বেপরোয়া গতিতে চলমান ডাম্প ট্রাকের চাপায় পিষ্ট করে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত চালকের সহকারী মো: সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার সকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
গ্রেফতার সহকারীর নাম মো: সোহেল (৩১)। তিনি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন বালিগাও এলাকার মো: খোরশেদ আলমের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাপাসিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মিঠুন বৈদ্য। তিনি বলেন, হেলপার মো. সোহেলকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ আগস্ট শুক্রবার সকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কোর্টবাজালিয়া বাজার এলাকায় বেপরোয়া গতির বালুবোঝাই একটি ডাম্প ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো ট—১৭—১০৮১) চাপায় প্রবীণ সাংবাদিক মঞ্জুর হোসেন মিলন (৫২) নিহত হন।
পরে প্রত্যক্ষদর্শী ও আত্মীয় স্বজনরা অভিযোগ তোলেন সাংবাদিক মিলনকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মঞ্জুর হোসেন মিলন গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দৈনিক ভোরের দর্পন ও দৈনিক করতোয়া পত্রিকার গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি এবং সাপ্তাহিক গাজীপুর দর্পন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ছিলেন।
গত সোমবার সকালে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব ১ এবং র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক ট্রাক চালক আহাদ মিয়াকে গ্রেফতার করে।
র্যাব জানায়, চালক আহাদের মাঝারী যানবাহন চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও ভারী যানবাহন চালানোর কোন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এছাড়াও ট্রাকটির ধারণ ক্ষমতা ৮ টন থাকা সত্বেও সে আনুমানিক ১৪ টন ওজনের বালু বোঝাই করে গাড়িটি চালিয়ে আসছিল। দুর্ঘটনার পর সে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে কোর্টবাজারে আসে এবং অটোযোগে কালিগঞ্জে চলে যায়। পরবর্তীতে সে সেখান থেকে তার বাড়ি পৌঁছায় এবং উক্ত দুর্ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানতে পারলে গ্রেফতার এড়াতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়।
পরে গত মঙ্গলবার কাপাসিয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার চালক আহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমনা্ড আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করেন। কিন্তু আদালত রিমান্ড শুনানীর জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঁখি আক্তারের আদালতে গ্রেফতার চালক আহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। আহাদ মিয়ার উপস্থিতিতে আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ ঐদিনই চালককে রিমান্ডে নিয়ে জিগ্যাসাবাদ করে। কিন্তু থানা পুলিশ ঐ চালকের কাছ থেকে কোন তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি।
মিলনের পরিবারের অভিযোগ, এঘটনায় পরিবারের পক্ষে প্রথেমে ছোট ভাই কামাল হোসেন ডাম্প ট্রাকের চালকের সাথে বাকি বিতন্ডার পরে চালক মিলনকে ট্রাকের নীচে ফেলে চাপা দিয়ে হত্যা করে বলে এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ সেই এজাহার গ্রহণ করেনি। পরে এজাহার পরিবর্তন করে মিলনের স্ত্রীকে বাদী করে সড়ক দুর্ঘটনায় ডাম্প ট্রাকের চাঁপায় মিলন নিহত হয়েছে মর্মে এজাহার নিয়ে মামলা রেকর্ড করে।