গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন ইসলামপুর এলাকায় তালাবদ্ধ নিজ ভাড়া বাড়ীর ঘর থেকে এক পোশাক কর্মীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কথিত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর কথিত স্বামী পুলিশের নিকট ঘটনা স্বীকার করেছে।
তাকে বুধবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহত পোশাক কর্মীর নাম শেখা বেগম (৩৫)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার কাটাখালি গ্রামের মো: সারোয়ার মিয়ার মেয়ে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন ইসলামপুর এলাকার শামসুর রহমানের বাড়িতে বিয়ে না করেই গ্রেফতার কথিত স্বামীর সাথে ঘর ভাড়া করে বসবাস করতেন। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টায় বাইরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে বাসন থানা পুলিশ।
গ্রেফতার কথিত স্বামীর নাম মোঃ আবুল হোসেন (৪৭)। তিনি দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার তারগাঁও ইউপির কাঠনা এলাকার নাজির উদ্দিনের ছেলে। তাকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার মদিনা ফ্যাক্টরীর পিছন থেকে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, সহকারী পুলিশ কমিশনার (সদর জোন) ফাহিম আসজাদ।
তিনি আরো জানান, গত ২১ অক্টোবর রাতে শিখা বেগম তার স্বামী পরিচয়দানকারী আবুল হোসেনকে সাথে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন হরিনারচালা এলাকায় শিখার মায়ের ভাড়া বাসায় গিয়ে রাতের খাবার খায়। পরে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তারা তাদের নিজের ভাড়া করা বাসায় ফিরে আসেন। পরের দিন ( ২২ অক্টোবর) সকালে শিখা বেগম কথিত স্বামী আবুল হোসেনের কাছে ১৬ হাজার টাকা দাবী করেন। মোঃ আবুল হোসেন টাকা দিতে অস্বীকার করলে একপর্যায়ে শিখা বেগম কথিত স্বামীকে থাপ্পড় দেয় ও কলার চেপে ধরে। এরপরে আবুল হোসেল কাজে যেতে চাইলে শিখা বেগম তাকে যেতে না দিয়ে রুমের ভিতর থেকে তালাবদ্ধ করে রাখে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে আবুল হোসেন শিখা বেগমের গলাটিপে ধরে। এতে শিখা বেগম অচেতন হয়ে পড়লে আবুল হোসেন মরদেহ কাঁথা দিয়া মুড়িয়ে ঘরের ভিতর রেখে বাহির থেকে দরজা তালাবন্ধ করে পালিয়ে যায়।
ফাহিম আসজাদ জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মোহাম্মদ শামছুর রহমান, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মোঃ খায়রুল আলমের নির্দেশনায় সহকারী পুলিশ কমিশনার (সদর জোন) ফাহিম আসজাদ ও বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে পুলিশ তদন্তে নামে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বাসন থানার একটি চৌকস টিম মরদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই জড়িত আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।