গণবাণী ডট কম:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বুধবার (১০ জানুয়ারি)। জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ গ্রহণ কক্ষে সকাল ১০টায় শপথ অনুষ্ঠিত হবে। শপথ বাক্য পাঠ করাবেন চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
নবনির্বাচিতদের বরণ করে নিতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) গণভবনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। বুধবার সকাল ১০ টায় নতুন সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
সংবিধানের ১৪৮-এর ২(ক) ও ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বলা হয়েছে, ‘এমপিদের সাধারণ নির্বাচনের ফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হওয়ার তারিখ হইতে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ব্যক্তি যে কোনো কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তার পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে ওই শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি।’
বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নিজেও এবার রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন, তারপর অন্যদের শপথ পড়াবেন।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি ২৯৯ আসনে ভোট হয়েছে। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় নওগাঁ–২ আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়নি। তবে, ২৯৯টি আসনে ভোট হলেও একমাত্র ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল আটকে আছে। কাজেই বুধবার ২৯৮টি আসনে নির্বাচিত নতুন জনপ্রতিনিধিদেরকেই শপথ পড়ানো হবে।
কমিশনের দেওয়া তালিকা অনুয়ায়ী নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠা লাভ করেছেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১১ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টির প্রার্থীরা একটি করে আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়লাভ করেছেন।
তবে, গত সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতরা বুধবারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন কি-না, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সদস্যরাই প্রথমে শপথ নেবেন। এরপর ক্রমানুসারে অন্যরাও শপথ নেবেন। শপথ শেষে নতুন সংসদ সদস্যরা সংসদ সচিবের কার্যালয়ের স্বাক্ষর খাতায় সই করবেন এবং একসঙ্গে তাদের ছবি তোলা হবে।
রেওয়াজ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে শুরু হবে নতুন সরকার গঠনের পর্ব। বিএনপি বিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হওয়ায় বর্তমান দলটি পুনরায় সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার নাগাদ নতুন সরকার দায়িত্ব নিতে পারে।
এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। এরপর বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের আয়োজন করা হবে।
এর আগে, একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর। এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১লা জানুয়ারি শপথ নেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। আর ৩রা জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান।
খবর: বিবিসি, বাসস।