গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লুর কোন অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। বর্তমানে যে রোগ হচ্ছে, সেটাকে তারা সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা বলে জানিয়েছেন।
রবিবার একটি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় সরকারের চিকিৎসা বিষয়ক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা: মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ”এইচ-১ এন ১ হচ্ছে সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা। এর ফলে মানুষ কিছু কমন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়। কিন্তু সেটা সোয়াইন ফ্লু নয়।” তিনি বলেন, ” আগে একসময় এইচ-১ এন-১ কে সোয়াইন ফ্লু বলা হতো। কিন্তু এখন আর এটাকে সোয়াইন ফ্লু বলা ঠিক নয়। ২০০৯ সালে এর মহামারী হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য থেকে একটি অ্যালার্ম দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে আর এই ভাইরাস মহামারী আকারে দেখা যায়নি। সব জায়গাতেই এটাকে কমন ফ্লু বা সাধারণ সর্দি-কাশি বলে বর্ণনা করা হয়।”
ডা. সেব্রিনা গণমাধ্যমকে বলছেন, ”বিশ্বের সব দেশেই এটা এখন সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসাবে সনাক্ত করা হয়েছে। এর সাথে এখন আর সোয়াইন ফ্লুর সম্পর্ক নেই।” বলছেন ডা. মীরজাদি সেব্রিনা।
আমেরিকা ও ইউরোপে এইচ-১এন-১ রয়েছে এবং সেখানে এটিকে মৌসুমি কমন ফ্লু বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।
তিনি বলছেন, ”এখানে এটা মহামারী হিসাবে দেখার কোন সুযোগ নেই। একটা দুই একটা কেস পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সেখানে আশঙ্কার কিছু নেই।” ”তবে হাই রিস্ক জনগোষ্ঠী, যেমন যাদের ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে, অ্যাজমা-শ্বাসকষ্ট আছে, ব্রংকিউলাইটিস, ৬৫ বছরের বেশি বয়সী, হার্ট-কিডনি রোগী, এইডস আক্রান্ত, গর্ভবতী নারী, শিশু ও ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।” দেশে সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন ও ওষুধ যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে বলেও তিনি জানান।
যেভাবে ছড়ায় রোগটি :
সাধারণত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে রোগটি সংক্রমিত হয়।
ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে, তার ব্যবহৃত পাত্রে খাবার খেলে বা ঐ ব্যক্তির কাপড় পড়লে ফ্লু ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
উপসর্গ :
এই ফ্লু’র উপসর্গ সাধারণ ফ্লু’র মতই হয়ে থাকে। জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, শরীরে ব্যাটা, ঠাণ্ডা ও অবসাদের মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে ফ্লু হলে। পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট, র্যাশ বা পাতলা পায়খানাও হতে পারে।
শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, ডায়বেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি বা কোনো ধরণের অসুখে ভুগতে থাকা ব্যক্তি ফ্লু’তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
সিংহভাগ ক্ষেত্রেই ফ্লু নিজে থেকেই সেরে যায়, তবে এর ফলে বিভিন্ন দেশে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ফ্লু’র ভাইরাসগুলো নিজেদের মধ্যে জিনগত উপাদান অদল বদল করতে পারার সক্ষমতা রয়েছে, তাই কোন ধরণের ফ্লু বিপজ্জনক হতে পারে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেন না চিকিৎসকরা।
২০০৯ সালে মেক্সিকোতে ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়।