গণবাণী ডট কম:
দেশে দুটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের এক নতুন গবেষণায় রাজধানী ঢাকার বাসিন্দাদের শতকরা ৪৫ ভাগ মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এর মানে হচ্ছে এরা ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ আইসিডিডিআর,বি যৌথভাবে এ গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএ আইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।
সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে দেশে করোনা পরিস্থিতি ও জিন রূপান্তর নিয়ে গবেষণার এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। আর অনলাইনের মাধ্যমে যোগ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।
গবেষণার তথ্য প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলা হয়, এন্টিবডি পরীক্ষায় ঢাকার ১২ হাজার ৬৯৯ জন মানুষের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তার মধ্যে ৪৫ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পজিটিভ। বস্তি এলাকায় এই সংক্রমণের হার প্রায় শতকরা ৭৪ ভাগ।
গবেষকরা বলেন, এই গবেষণা করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, রোগীদের চিকিৎসা এবং ভবিষ্যতে ভ্যাক্সিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। নতুন এই গবেষণা বলছে, কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়া মানুষের মধ্যে ৯৪ শতাংশই ছিলেন লক্ষ্মণ ও উপসর্গহীন।
আক্রান্তদের ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মানুষের হার ১৮%।
গবেষণায় লক্ষ্মণ ও উপসর্গ নেই এমন ৮১৭ ব্যক্তির দেহের নমুনা পরীক্ষা করে তার মধ্যে ৫২৮ জনই কোভিড-১৯ শনাক্ত পাওয়া যায়। এছাড়া উপসর্গ ছিল এমন ৫৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে তার মধ্যে ৪০০ জনের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া যায়।
সংক্রমণের হার নারীদের মধ্যে কম আগে এমন একটি ধারণা ছিল। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেদিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেইদিন সংক্রমণের হারে নারী ও পুরুষের মধ্যে তেমন ফারাক দেখা যায়নি।
গবেষণার জন্য রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি মহল্লা বাছাই করে ১২০টি বাড়ি এই জরিপে নেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর ৮টি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়।জরিপ চলে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল।
ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, নতুন তথ্যে দেখা যাচ্ছে কেউই করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশংকা থেকে মুক্ত নয়।
ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া কোন উপায় নেই।