গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরে বৃহষ্পতিবার পৃথক অভিযানে এক মাংস বিক্রেতা ও মৎস খাদ্য উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানকে মোট দু’লাখ ষাট হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় আদালত খাবার অনুপযোগী ১৮’শ কেজি মহিষের প্যাকেটজাত মাংস এবং প্রায় ৫’শ কেজি মেয়াদোত্তীর্ন মৎস্য খাদ্য জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল জাকী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সেলিম উল্লাহ জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের লক্ষিপুরা এলাকায় দু’টি রেডি মিট (প্যাকেটজাত মাংস) দোকানে খাবার অনুপযোগী গরু ও মহিষের প্যাকেটজাত মাংস সংরÿণ ও বিক্রি করা হচ্ছে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে বৃহষ্পতিবার দুপুরে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল জাকীর নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই এলাকার ভাই ভাই গোস্ত বিতান নামের একটি দোকনে অভিযান চালায়। এসময় অননুমোদিতভাবে বিদেশ থেকে আমদানী করে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নোংরা পরিবেশে সংরক্ষণ ও বিক্রির অপরাধে দোকান মালিক নব কুমার দত্তকে আটক ও ১৮’শ কেজি মহিষের প্যাকেটজাত মাংস জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় আদালত নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর ৩৮ ও ৩৯ ধারায় ওই দোকান মালিককে দু’লাখ টাকা অর্থদন্ড ও আদায় করে। পরে জব্দকৃত মাংসগুলো উপজেলা প্রানীসম্পদ কার্যালয় প্রাঙ্গনে মাটিচাপা দেয়া হয়। এসময় অভিযানের খবর পেয়ে পাশর্^বর্তী বিসমিল্লাহ গোস্ত বিতান নামের অপর দোকান মালিক মোঃ রফিকুল ইসলাম পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, প্যাকেটজাত মাংসগুলো ভারত থেকে আমদানী করার কথা জানালেও বিক্রেতা এর কোন বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। মাংসের প্যাকেটে উৎপাদন তারিখ ও প্রতিষ্ঠাণের নাম উলেøখ ছিল না। এসব মাংসে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোন উপাদান আছে কি-না তা পরীক্ষার জন্য ঢাকার প্রাণী সম্পদের গবেষণা কেন্দ্রে নমূনা পাঠানো হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের লোকজন অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের এ মাংসের অন্যতম ক্রেতা ছিল। তারা দোকানটিকে সস্তা মূল্যের গুরুর মাংসের দোকান হিসেবে চিনে।
এছাড়াও একই ভ্রাম্যমাণ আদালত পাশ্ববর্তী লক্ষিপুরার তিনসড়ক এলাকার লায়ন ফিডস্ লিমিটেড নামের একটি পশু ও মৎস্য খাদ্য উৎপাদন কারখানায় অভিযান চালায়। ওই কারখানায় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মৎস খাদ্য উৎপাদন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য সংরক্ষণ করা ছিল। এছাড়া উৎপাদিত খাদ্যের সঙ্গে খাদ্যের উচ্ছিষ্ট বর্জ্যও রাখা ছিল। সেসব বর্জ্য থেকে পোকা মাকড় জন্ম হয়ে উৎপাদিত খাদ্যেও ছড়িয়ে পড়েছিল। এসব কারণে ওই কারখানা থেকে প্রায় ৫শ’ কেজি মৎস খাদ্য জব্দ করে ধ্বংস এবং কারখানা মালিককে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় করা হয়। অভিযানকালে গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ ও মৎস বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।