কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান খুলে ইফতার বিক্রি করার সময় ভীড় তৈরী করে সামাজিক দুরত্ব বঝায় না রাখায় দোকান খুলতে নিষেধ করতে গিয়ে স্থানীয়দের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এক সাবেক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রফিকুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাপাসিয়া উপজেলায় সকল হাট বাজার ও দোকানপাট পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এ নির্দেশ অমান্য করে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের রায়েদ বাজারে দোকানপাট খোলা রেখে বিভিন্ন রকমের ইফতার সামগ্রী বিক্রী করা হচ্ছিল। এতে দোকানের সামনে ও আশপাশে ক্রেতা ছাড়াও অন্যান্য লোকজনের ভীড় সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সংক্রামক ব্যধি করোনা বিস্তার রোধে সিংহশ্রী পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে দোকান বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেন। এসময় তারা লোকজনকে সরে যাবার জন্য বলেন। কিন্তু স্থানীয়রা পুলিশের নির্দেশনা না মেনে সাবেক ইউপি সদস্য বাদলের নেতৃত্বে উশৃঙ্খল ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঠা নিয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। এতে উপ পুলিশ পরিদর্শক (AB) অবু কায়েস ও ৪ কনষ্টেলসহ ৫ জন আহত হয়। পরে খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক নুরুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটননাস্হলে পৌছে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় জড়িত সাবেক ইউপি সদস্য বাদল গ্রেফতার করা হয়। এ ব্যাপারে থানার এএসআই সেকান্দার আলী বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা, হামলা ও গুরুতর আহত করার অপরাধে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসা: ইসমত আরা এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রাণঘাতি করোনাভাইরোসের বিস্তার ঠেকাতে কাপাসিয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলের হাট বাজারে ক্রেতাদের ভীড় বৃদ্ধি হওয়া এবং বাজারগুলোতে ক্রেতাগণ সামাজিক দুরত্ব বঝায় না রাখার প্রেক্ষিতে উপজেলায় সকল দোকান ও সাপ্তাহিক হাট বাজার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
গণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে করোনাভাইরাস আক্রান্ত (৭০ জন) রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। করোনাভাইরাস কাপাসিয়া উপজেলায় যাতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, তা প্রতিরোধের (করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো) লক্ষ্যে কাপাসিয়া উপজেলাধীন সকল ইউনিয়নের ছোট বড় হাট-বাজারের সমস্ত প্রকার দোকান ও সাপ্তাহিক হাট আগামী ২৭ এপ্রিল ২০২০, সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল ব্যবসায়ী, ইজরাদার, বাজার পরিচালনা কমিটিকে বজার বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।
তবে, তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ীগণ ভ্যান গাড়ীতে করে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাড়া-মহল্লায় শাক-সবজি মাছ-মাংস ও কাঁচামাল বিক্রয় করতে পারবেন।