গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর গাছা ও টঙ্গী এলাকার দুইটি পোশাক কারাখনার দুই শ্রমিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের একজন গাজীপুর থেকে রংপুর গিয়ে এবং অপরজন নওগাঁ থেকে টঙ্গী ফেরত এসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের একজন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অপরজন টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের একজনের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা থানার হরনাথপুর কাদিরাবাদ এলাকায়। তার বয়স (২৮)। তিনি গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার কেবি বাজার বড়বাড়ি এলাকায় পার্ক স্টার এ্যাপারেলস লিমিটেড নামের কারখানায় চাকুরি করেন। তিনি একই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
আক্রান্ত ওই ব্যক্তি জানান, তিনি করোনার ছুটিতে গত ২৩ এপ্রিল রংপুর গ্রামের বাড়ি যান। সেখানে যাবার পর বুক ও গলা জ্বালা পোড়া দেখা দেয়। পরে স্বাস্থ্য কর্মীরা বাসায় গিয়ে করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে যায়। ফলাফল জানার আগেই তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে গত ২৮ এপ্রিল গাজীপুরের ফিরে আসেন। বুক-গলা জ্বালা-পোড়া নিয়ে তিনি একাই গাজীপুরের বাসায় অবস্থান করছিলেন। গত ১ মে ফোনে রংপুর থেকে তাকে জানানো হয়, তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পরে কারখানার কাজে যোগ না দিয়ে শনিবার (২ মে) রাতে তিনি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে জানান, এ হাসপাতাল এখন কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে শুধু করোনা পজেটিভ রোগীদের আইসোলেশনে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। করোনা পজেটিভ ছাড়া অন্য কাউকে এখানে ভর্তি করা হয়না।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, অপরজন টঙ্গীর শান্তা এক্সপ্রেশন লিমিটেড নামের পোশাক কারখানায় চাকুরী করেন। তিনি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার মুদাফা এলাকায় বসবাস করেন। তিনি করোনা ছুটিতে ২০ এপ্রিল নওগাঁ গ্রামের বাড়ি যান। পরে সেখান থেকে গত ১ মে মুদাফা এলাকায় ফিরে তার দেহের নমুনা টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষায় করলে করোনা পজেটিভ হয়।
আক্রান্ত এ ব্যক্তি জানান, তিনি নওগাঁ বাড়িতে যাওয়ার পর ২৪ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষা দেয়া হলে তার দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নেগেটিভ আসে। ১ মে গ্রামের বাড়ি থেকে টঙ্গীর বাসায় ঢুকতে গেলে বাসার মালিক করোনা পরীক্ষা ছাড়া ঢুকতে দেবে বলে জানান। এমতাবস্থায় স্থানীয় টঙ্গী গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে করোনা সংক্রমন পরীক্ষার জন্য নমুনা দেই। তখন সেখানকার ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানায় তার দেহে করোনা পজেটিভ রয়েছে। বাড়ি থেকে আসার পর আর কারখানায় যোগ দেইনি।
টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. নাজিম উদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে জানান, তারা র্যা পিড এন্টিবাডি দিয়ে একাধিকবার পরীক্ষা করে তার দেহে করোনা সংক্রমন পজেটিভ পেয়েছেন। তাই তাকে এ হাসপাতালেই আসোলেশনে রাখা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপাতি এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, খবরটি শুনেছি। এ নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। ওই শ্রমিকদের করোনা সংক্রমনের প্রকৃত উৎস ও বিস্তরণের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র : বিডিনিউজ ২৪.কম।